আসামের বাঙালি জীবনের ভূমিতল সত্যের ভিতটা গণভোট ও দেশভাগের হঠাৎ ঘায়ে যখন ছিন্নভিন্ন অবস্থা থেকে একটু থিতু হচ্ছে তখনই বলা হয় বাঙালি বিদেশি, বলা হয় বাংলায় পড়াশুনা করা যাবে না স্বাধীন ... See more
TK. 720
বইটি বিদেশি প্রকাশনী বা সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করে আনতে আমাদের ৩০ থেকে ৪০ কর্মদিবস সময় লেগে যেতে পারে।
কমিয়ে দেখুন
চলছে বর্ষসেরা অফার ক্লিয়ারেন্স সেল! থাকছে বইয়ে ৭০% ও পণ্যে ৭৮% পর্যন্ত ছাড়!
চলছে বর্ষসেরা অফার ক্লিয়ারেন্স সেল! থাকছে বইয়ে ৭০% ও পণ্যে ৭৮% পর্যন্ত ছাড়!
আসামের বাঙালি জীবনের ভূমিতল সত্যের ভিতটা গণভোট ও দেশভাগের হঠাৎ ঘায়ে যখন ছিন্নভিন্ন অবস্থা থেকে একটু থিতু হচ্ছে তখনই বলা হয় বাঙালি বিদেশি, বলা হয় বাংলায় পড়াশুনা করা যাবে না স্বাধীন দেশে, তাড়াতে হবে স্বভূমি থেকে বাঙালিকে, তাঁবু গোটাতে হবে। কিন্তু বাঙালি যাবে কোথায়, কেন যাবে বংশ পরম্পরায় আসামবাসী বাঙালি। স্থায়ী বসতি থেকে উৎখাতের রাষ্ট্রীয় চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাঙালি প্রথম প্রতিবাদ করে ১৯৬১র উনিশে মে আর সেদিনই এগারোজন শহিদ হন, স্বাধীন দেশে প্রথম ভাষাশহিদ। এর পরেও দফায় দফায় শহিদ হয়েছেন দক্ষিণ আসামে, এমনকি উত্তর আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়ও চোরাগাপ্তা বাঙালি হত্যা হয়েছে। গোরেশ্বর হত্যাকাণ্ড হয়েছে নেলির চরমানুষদের হত্যা হয়েছে। এমন যখন অবস্থা তখন আসামের বাঙালি সর্বাত্মক প্রতিরোধে নেমেছে যার যেমন ক্ষমতা সেই অস্ত্র হাতে। আসামের বাঙালির কবি শক্তিপদ ব্রহ্মচারী কবিতায় জানিয়েছেন তাঁর ক্ষোভ, ‘যে কেড়েছে বাস্তুভিটে, সে-ই কেড়েছে ভয়, আকাশ জুড়ে লেখা আমার আত্মপরিচয়। কথাসাহিত্যিকরাও এক নবভাষায় লিখেছেন তার যন্ত্রণার যাপন কথা, তার বিরাগ। দ্বন্দ্ব আরও সাংঘাতিক আকার ধারণ করেছে, আসামের বাঙালি এখন ধ্বংসের মুখোমুখি। রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জি নবায়নের অছিলায় চল্লিশ লাখের উপর বাঙালির নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশাল বিশাল গারদ তৈরি হয়েছে বরাক উপত্যকায় ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়। বিদেশি, বহিরাগত ও রাষ্ট্রহীন তকমাধারী বাঙালির জন্য বন্দীশিবির। আসামের ভূমিপুত্র বাঙালি জানে না কোন সে বাহির থেকে তার আগমন, কোন সে বিদেশ, কোথায় যাবে জানে না বিপন্ন বাঙালি। এই যখন অবস্থা তখন বাঙালি কথাসাহিত্যিকও তার সীমিত ক্ষমতায় রচনা করে চলেছেন এক যৌথ আখ্যান, বঞ্চনার মহা-ইতিহাস। মহড়া দিচ্ছেন প্রতিরোধের। বলছেন তোমরা কে হে, মারী মন্বস্তরে মরে নি যে বাঙালি তাকে মারার তোমরা কো আসামে বাংলা কথাসাহিত্যের উজ্জ্বল উত্তরাধিকার স্বাধীনতার আগে থেকেই ছিল, কিন্তু সত্তরের দশক থেকে ঔজ্জ্বল্য দীপ্যমান হতে শুরু করে। অস্তিত্ব সংকট যত ঘনীভূত হচ্ছে, ততই কথকের সমবায় দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়েছে, বৃহৎকথার লিখন চলছে অনেক হাতে। এবং বাংলা কথাসাহিত্যেও এক নির্মম সত্যভাষার সূচনা হয়েছে আসামে। এরকম চুয়াল্লিশ জন কথাকারের নির্বাচিত গল্প নিয়ে ” আসামের বাংলা ছোটগল্প ” সংকলন গ্রন্থে প্রতিফলিত সময় এর দর্পন।