কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঊনবিংশ-বিংশ শতকের সাহিত্য, কাব্য, নাটক, সঙ্গীত ও শিল্পের জগতে এক যুগান্তর সৃষ্টি করেছেন, বিশেষ করে সঙ্গীত রচনা, সুর যোজনা ও সাংকেতিক নাটক রচনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে শুধু কেন, সমগ্র ভারতে তাঁর মতো মহান ও সৃজনশক্তিসম্পন্ন প্রতিভাবান ব্যক্তি খুব কমই জন্মগ্রহণ করেছেন। অগণিত সাহিত্যিক, কবি, নাট্যকার, সঙ্গীতস্রষ্টা ও সুরকার ঊনবিংশ-বিংশ শতকে বাংলার সমাজে আবির্ভূত হয়ে ভারতের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র ও অবদানকে সমুজ্জ্বল করেছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের দান অপরূপভাবে ও অপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে বাংলাদেশকে বা ভারতবর্ষকে শুধু নয়, সমগ্র বিশ্বের সমাজকে মহিমান্বিত করেছে। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের পর যদি মানুষ সহজে অনায়াসভাবে সাহিত্যের ক্ষেত্রে স্মরণে রাখবার চেষ্টা করে তবে রবীন্দ্রনাথকেই স্মরণ করবে। সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও তাই। নবম-দশম শতকের চর্যাগীতি থেকে আরম্ভ করে গীতগোবিন্দ পদগান, বিল্বমঙ্গলের কৃষ্ণকর্ণামৃত, বড়ুচন্ডীদাস- বিদ্যাপতির কৃষ্ণকীর্তন ও ব্রজবুলি ভাষার পদকীর্তন এবং বিভিন্ন বৈষ্ণব-পদকর্তাগণের রচিত পদগান, সাধক রামপ্রসাদের, কমলাকান্ত রাজা রামকৃষ্ণ প্রভৃতির শ্যামা-সঙ্গীত তাছাড়া বাউল, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, গম্ভীরা এবং বাংলাদেশের অভিজাত বৈঠকী-বাংলা টপ্ খেয়াল, ঢপকীর্তন, রামায়ণ গান, কথকতা প্রভৃতি অসংখ্য গীতশ্রেণীর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের গান বা রবীন্দ্রসঙ্গীত স্বকীয় রচনাশৈলীর মাধুর্যে