বিচিত্রতায় ভরা বর্ণাঢ্য এক বিশাল ভারতবর্ষ। ধর্মানুভ‚তির আমেজ সিক্ত এই ভারতবর্ষ হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রসূতিগার। ইসলাম ধর্ম এখানে স্থান করে নেয় স্বমহিমায়। হিন্দু বলতে কোন ধর্মের অনুসারী না বুঝিয়ে সিন্ধু/হিন্দু নদের অববাহিকায় বসবাসকারী সমগ্র ভারতের লোকদের বোঝাতো। ‘ভারত’ বিভিন্ন প্রাচীন সংস্কৃত পুরাণ থেকে এসেছেÑ ‘ভারত’ ‘অগ্নির’ একটি নাম। ভগবত পুরানে ‘ভারত’ ভরতের নাম থেকে এসেছে বলে বর্ণিত। 'India' কথাটি সিন্ধু নদের আদি ফার্সি নাম হিন্দু থেকে আসা। প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দের বলতো ইন্দো বা ইন্দাস। ‘ইন্দাস’ নাম থেকে ‘ইন্ডিয়া’। আর্যরা ককেশীয় শ্রেণিভ‚ক্ত আফ্রিকান জাতি-খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫ হাজার বছর পূর্বে আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। খ্রিষ্টপূর্ব ২৫ হাজার বছর পূর্বে এরা বর্তমান ইরান অঞ্চলে আসে। তাদের একটি দল কোন একসময় ভারতবর্ষে এসে বসতি গড়ে। তাই এর নাম হয় আর্য দেশ। পৌরাণিক কাহিনী ও সংস্কৃত শ্লোক থেকে আর্যদের অত্যন্ত জ্ঞানী মনে করা হয়। পুরাতন শিলালিপি থেকে ভারতবর্ষ নামটির পরিচিতির পূর্বে এর পরিচিতি ছিল জম্বু দ্বীপ। উপনিবেশবাদী তত্ত¡ অনুযায়ী ভারতবর্ষ ছিল পারস্পরিক বিদ্বেষ ও বিভেদের দীর্ঘ এক দেশ। নানা সংস্কৃতি, নানা ভাষা, নানা মতের দেশ ভারতবর্ষ। প্রাকৃতিক পরিবেশগত বৈচিত্র্যের মতো এদেশের সমাজেও বৈচিত্র্যের অভাব নেই। এক বহুত্ববাদি সমাজ। জাতিগোষ্ঠীগত বৈচিত্র্য, ভাষাগত বৈচিত্র্য, ধর্মীয় বৈচিত্র্য, নৃক‚ল বৈচিত্র্য, জাতপাতগত বৈচিত্র্য, সংস্কৃতিগত বৈচিত্র্য। আর বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য (unity in Diversity)। ভৌগোলিক বৈচিত্র্য ও ঐক্য।