উডি এলেন কে? অনুবাদকের ভূমিকায় উডি এলেনের পরিচয় না দিলেও কি চলতো?। উডির উইকি পেইজে গেলেই তার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু তাও আমি দুইটা কারণে সংক্ষেপে পরিচয় দিচ্ছি। প্রথমত, উইকিপিডিয়ায় পাওয়া যাবে না অথচ এই বইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক- এমন কিছু তথ্য শেয়ার করা। দ্বিতীয়ত, এই ইন্টারভিউটার কন্টেক্সট ও গুরুত্ব সহজে বোঝা যাবে। বোঝা যাবে কেন প্যারিস রিভিউর মতো প্রভাবশালী ম্যাগাজিন তাদের হিউমারিস্টদের ইন্টারভিউ সিরিজ- ‘আর্ট অফ হিউমার’-এর শুরুটা কেন উডি এলেনকে দিয়া করছে। এ্যামেরিকান ফিল্ম কমেডির সবচে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন উডি এলেন। ইনসিকিউরড, নার্ডি ও সোশ্যালি অকওয়ার্ড কমিক ক্যারেক্টারের যে গ্রহণযোগ্যতা বা নব্বয়ের দশক থেকে 'কুল' হয়ে ওঠা, কিংবা ২১ শতকের বিগ ব্যাং, সিলিকন ভ্যালি কিংবা এই টাইপ সিটকমে প্রচুর জনপ্রিয় ও স্বাভাবিক হয়া ওঠা- সেইটা তৈরিতে, ৭০ আর ৮০'র দশকের উডি এলেনের ভূমিকা কম না। বাংলাদেশি কমেডিতে বা কমিক টেম্পারমেন্টে হুমায়ূন আহমেদের চুটকিমূলক হিউমারের ব্যাপক যেমন প্রভাব, এ্যামেরিকায়, বিশেষভাবে, সমাজের মিসফিট বা ইনসিকিউরড চরিত্রওয়ালা কমেডিতে কাছাকাছি ধরণের প্রভাব উডি এলেনের। এলেন স্টুয়ার্ট কনিগসবার্গ ওরফে উডি এলেন ফিল্মমেকার হিসেবে মশহুর। যদিও স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান, লেখক, ফিল্ম-মেকার, নাট্যকার –ইত্যাদি অনেকগুলা পরিচয় তার আছে। আরেকটা খ্যাতি অল্প বয়সী নারীদের সঙ্গে প্রেম, যার একটা বড় অংশ স্ক্যান্ডালাস এবং উডির সিনেমাতেও সেইসব সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসি ও নিউরোসিসের প্রতিফলন আছে। সেক্স ও আর্ট বাদে, উডি এলেনের মুভির চরিত্ররা জীবনের অর্থ বা মানে নিয়া সবচাইতে বেশি কথা বলে। ফিল্ম, নাটক বা লেখা সবগুলা ফর্ম মিলায়ে জীবনের মানে বা মুল্যের ব্যাপারে তার বানানো চরিত্রদের কোনো কন্সিসটেন্ট পজিশন আছে কি? অহরহ জোক, রোমান্টিক প্রেম বা আর্টের থ্রুতে নিজেরে এক্সপ্রেস করার বাসনা আর স্ট্রাগল থাকা সত্ত্বেও, আমি মনে করি, উত্তরটা 'হ্যা। আর সেইটা হইতেছে, জীবন গভীরভাবে অর্থহীন একটা ঘটনা। এই বইয়ে আলাপচারিতাতেও তার এমন জীবন দর্শনের কিছু ছাপ পাওয়া যাবে। উডির বেশিরভাগ মুভিতে মৃত্যু বারবার ঘুরে ফিরে আসে। যদিও মৃত্যুর ব্যাপারে তার মন্তব্য কী এই প্রশ্নের জবাবে প্রায়ই বলেন, ‘আইম স্ট্রংলি এগেইন্সট ইট’। কোনো কিছু নিয়া উডির অবসেশন থেকে থাকলে সেইটা হইতেছে জীবনের অর্থহীনতা ও মৃত্যু।