মুজিব জন্মশতবর্ষ-স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকালে হোসনে আরা রচিত ‘বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগের রাজনীতি’ গ্রন্থটির প্রকাশ সময়ের পরিপ্রেক্ষিত বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছাত্রলীগের প্রাণের সম্পর্ক—সেই সম্পর্ক বিচারে এই বইয়ের পাঁচটি অধ্যায়ে বিশ্লেষিত দৃষ্টিভঙ্গি পাঠক-সমালোচক-গবেষকগণকে নতুন প্রণোদনা দেবে নিঃসন্দেহে। খোকা নামের মুজিব কীভাবে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ মুজিবুর রহমান থেকে একটি জাতি রাষ্ট্রের স্রষ্টা, মহানায়ক, ত্রাতা এবং জাতির জনক হয়ে উঠলেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে তাঁর আত্মিক-মানসিক-পারিবারিক-রাজনৈতিক সম্পর্ক কত গভীর সেইসব কাহিনী গবেষক-বিশ্লেষকের প্রেক্ষণ বিন্দুর সাযুজ্যে তুলে এনেছেন অধ্যাপক হোসনে আরা। একজন ইতিহাসের অধ্যাপক এবং ছাত্রলীগের প্রত্যক্ষ কর্মী-নেত্রী হয়েও নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গির যে পরিচয় তিনি ‘বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগ’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি ১৯৯২ সালে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্র-সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের একমাত্র নির্বাচিত সদস্য, ১৯৯৬ সালে প্রীতিলতা হল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং ১৯৯৯-২০০১ পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসাবে পারদর্শিতার সঙ্গে ছাত্ররাজনীতিতে নেতৃত্ব দেন এবং সংগঠনকে এগিয়ে নেন। গ্রন্থের প্রথম অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছাত্রলীগের সম্পর্কের গভীরতা বিশ্লেষিত হয়েছে—ক্রমান্বয়ে বঙ্গবন্ধুর জেল জীবন, ছাত্রলীগের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ও জনপ্রিয়তা আলোচিত হয়েছে। একজন রাজনৈতিক দার্শনিকের যে গুণ, মাহাত্ম্য, ঔদার্য্য, বীরত্ব থাকা দরকার তা উঠে এসেছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ শীর্ষক অধ্যায়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রাণবীজ ভাষা আন্দোলন ও ছয় দফা প্রণয়ন—এই দুই রাজনৈতিক-দার্শনিক অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞান বিশ্লেষিত হয়েছে চতুর্থ অধ্যায়ে। আর নারী নেতৃত্বের উজ্জ্বলতায় পরিপূর্ণ শেষ অধ্যায়। গ্রন্থখানি পাঠে পাঠকগণ সামান্য হলেও উপকৃত হবেন বলেই আমি আশাবাদী। ড. গোলাম মোস্তফা লেখক, সম্পাদক চেয়ারম্যান FIITS FOUNDATION