মুহাম্মদ বদর মুনির, সত্তর—আশির দশকে পাকিস্তানের একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক। জন্ম ভারতের বিহারে। সেখানে কেটেছে শৈশব—কৈশোরের কিছুদিন। বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীর অফিসার। ভারতের বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব ছিলেন তাঁর কৈশোরের ক্লাস—বন্ধু। ১৯৪৭—এ ভারত ভাগের সময় পরিবারের সাথে পাকিস্তান আসেন। কৈশোর, যৌবন কিংবা কর্মজীবনে তাঁর বন্ধুদের তালিকায় বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের অনেক গণ্যমান্য রয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই ছিলেন তাঁর বন্ধু। লেখালেখির শুরু ছোটবেলা থেকে। পাকিস্তান আন্দোলন নিয়ে তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় দৈনিক সদা—এ—আম১ পত্রিকায়। সাংবাদিকতা পেশায় আসেন তৎকালীন জনপ্রিয় উর্দু পত্রিকা দৈনিক জমিনদার২—এ চাকুরির মাধ্যমে। তিনি কাজ করেছেন দৈনিক ইমরোজ, দৈনিক আকরাম, দৈনিক শাহাব, দৈনিক এশিয়া ইত্যাদি পত্রিকায়। সাপ্তাহিক আইন, নেদা—এ খিলাফত, নওয়া—এ ওয়াক্ত, ফ্যামেলি, এমন কি বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাকেও নিয়মিত লিখেছেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে আওয়ামী লীগে এসেছিলেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলেন কখনো পারিবারিক সদস্য, কখনো ব্যক্তিগত সেক্রেটারি হয়ে। দল আওয়ামী লীগ থেকে তাঁর কাছে বড় ছিলো বঙ্গবন্ধুর বন্ধুত্ব। আওয়ামী লীগই তাঁর প্রথম ও শেষ রাজনৈতিক দল। সত্তোরের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের সকল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, ১৯৭১—এ পাঞ্জাব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, যা এই বইয়ের মূল উপাদান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তিনি যেভাবে দেখেছেন এবং জেনেছেন তা নিয়ে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে উর্দুতে প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা ‘জয়সা কেহ মঁয় জানতা হূঁ: শেখ মুজিবুর রহমান’ গ্রন্থ। লেখকের প্রায় পঁচিশ বছরের কষ্ট ও সাধনার ফসল দু’শ ছিয়াশি পৃষ্টার উর্দু এই বই। বইটিতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বিভিন্ন কথার পাশাপাশি রয়েছে উপমহাদেশীয় রাজনীতির অনেক নির্ভরযোগ্য তথ্য।