বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অনিবার্য নাম শেখ হাসিনা। সেই ১৯৮১ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে আজ অবধি কখনো বিরোধীদলীয় নেতা, আবার কখনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে ভূমিকা পালন করে আসছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। দুই অসাধারণ গুণ-সাহস ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার সমাহার ঘটেছে তাঁর চরিত্রে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় তিনি পার্বত্য শান্তিচুক্তি, বিডিআর বিদ্রোহ দমন, বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইত্যাদি অসম সাহসিকতাপূর্ণ পদক্ষেপ তা বাস্তবায়ন করেছেন। ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিক হিসেবে শেখ হাসিনারও নিশ্চয়ই কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে তাঁর মূল্যায়ন করতে হলে তাঁকে দেখতে হবে সমগ্রতায়। সমগ্রতার মূল্যায়নে তিনি নিশ্চিতভাবে এক সফল রাষ্ট্রনায়ক। আলোচ্য গ্রন্থটিতে লেখক শেখ হাসিনাকে পূর্ণাঙ্গ অবয়বে চিত্রিত করার প্রয়াস পেয়েছেন। বইটি পড়া শেষ করলে পাঠক কিছুক্ষণ ঝিম ধরে বসে থাকবেন এবং এই উপলব্ধিতে পৌঁছবেন যে, লেখক নিজের অথবা পাঠকের সঙ্গে প্রতারণা করেননি। আর নিন্দুকেরা বলতে বাধ্য হবেন, শেখ হাসিনাকে অপছন্দ করা যায়; কিন্তু উপেক্ষা করা যায় না।
বিভুরঞ্জন সরকার। জন্ম ১৯৫৪ সালে। ষাটের দশকের শেষ দিকে স্কুল ছাত্র থাকাকালেই দৈনিক আজাদ-এর মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। লেখাপড়া শেষ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিকে কাজ করেছেন। দৈনিক মাতৃভূমি, সাপ্তাহিক চলতিপত্রের সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক মৃদুভাষণের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আশির দশকে এরশাদবিরােধী আন্দোলনের সময় সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে ‘তারিখ ইব্রাহিম' ছদ্মনামে লেখা তার রাজনৈতিক নিবন্ধ যথেষ্ট পাঠকপ্রিয় হয়েছিল। এখনাে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে। নিয়মিত কলাম লিখছেন। ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিম কর্মী ছিলেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ। সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী ছিলেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ ১০টি, সম্পাদিত গ্রন্থ ৪টি।