সন্তানদের দ্রুত ঘুম পাড়ানোর জন্য মায়েরা জ্বিন-ভূতের গল্প বলে ভয় দেখিয়ে থাকেন। সন্ধ্যা হলেই জ্বিন-ভূতের অসংখ্য কাল্পনিক গল্পের পসরা খুলে বসেন দাদী-নানীরা। অনেকক্ষেত্রেই নানারকম প্রোপাগাণ্ডা ও কুসংস্কারের কারণে একসময় অনেকেই বিশ্বাস করে ফেলেন, জ্বিন বলতে পৃথিবীতে কিছুই নেই। জ্বিন সংক্রান্ত কল্পনা ও কুসংস্কারের কারণে আরেকটি শ্রেণী জ্বিন জগৎ সম্পর্কে জানা, সে সম্পর্কে চিন্তা করা গুরুত্বহীন মনে করে। অথচ জ্বিনজাতি আল্লাহ তা'আলার গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি, এমনকি পবিত্র কুরআনের ৭২ তম সুরাটি জ্বিনজাতিকে কেন্দ্র করে নাজিল করা হয়েছে। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে জ্বিনদের কথা উল্লেখ করেছেন যেখানে, সেখানে জ্বিনজাতি সম্পর্কে জানা গুরুত্বহীন হয় কী করে! কাজেই জ্বিনজাতি অদৃশ্য হলেও তাদের কর্মকাণ্ড আমাদের জন্য জানা গুরুত্বপূর্ণ, জ্বিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করা, জ্বিন সম্পর্কে ভুল ধারণা থেকে বেঁচে থাকা, বিভিন্ন গালগল্পের ফাঁদে না পড়া- এ-সবই আমাদের কর্তব্য। সমাজে জ্বীন নিয়ে যে বিভ্রান্তিগুলো রয়েছে তা থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য। সেগুলোর অপনোদনের করা হয়েছে বইটিতে। জ্বিন জগতের সঙ্গে আমাদের একধরনের কল্পনার যোগসূত্র আছে। একটি জাতির মধ্যে ভালো-মন্দ শ্রেণি রয়েছে; জ্বিনেরাও এর ব্যতিক্রম নয়। জ্বিন ও মানুষের বিয়ে, জ্বিনদের অস্তিত্বের প্রমাণ, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জ্বিনদের আগমনের ঘটনা, ইবলিস ও জ্বিনদের যোগসূত্র, জ্বিনকেন্দ্রিক বিভিন্ন অসুস্থতা- এমন আরও নানাবিধ বিষয় নিয়ে রচিত এই বইটি; বাংলাভাষায় জ্বিন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ একটি গ্রন্থ বলা যায় বইটিকে । নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে বইটির প্রতিটি তথ্য নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইনসাফের সাথে, কোনো অলীক বর্ণনায় না গিয়ে বইটিতে প্রতিটি বক্তব্য তুলে আনা হয়েছে বিশ্লেষণ ও গবেষণার মাধ্যমে মৌলিক বক্তব্য উপস্থাপন করে বইটি প্রস্তুত করা হয়েছে।