ভূমিকা বৈচিত্রময় দেশ আমাদের এই ভারতবর্ষ। হিন্দু, মুসলমান, শিখ, বৌদ্ধ নানান ধর্মের মানুষের সমন্বয় ঘটেছে ভারতবর্ষে। আমাদের ভারতবর্ষে বহু মহামানব জন্মগ্রহন করেছেন জগতের কল্যানের জন্য। সংস্কৃতে যাকে বলা হয় জগদ্ধিতায়। এমনই এক মহাপুরুষের আবির্ভাব ঘটেছিল এই যুগে যিনি তাঁর ধর্মানিষ্ঠা, ত্যাগ, বৈরাগ্য, অলৌকিক জীবন এবং অসাধারন প্রতিভা দ্বারা' শুধুমাত্র ভারতেই নয় সমগ্র বিশ্বের মানব সমাজকে মোহিত করেছেন, দিকভ্রান্ত মানুষকে দিয়েছেন সঠিক পথের সন্ধান, তিনিই সেই মহাপুরুষ স্বামী বিবেকানন্দ। পরাধীন ভারতবর্ষে পাশ্চাত্য জাতি সুলভ বহু দোষ ত্রুটিই ভারতবাসীর জীবনে প্রবেশ করল। ভারতীয় সাংস্কৃতিতে এর প্রভাব বিস্তার হল। তবে নানা সম্প্রদায় সৃষ্টি হল, নানা ধর্ম প্রসার লাভ করতে লাগলো। মুসলমানদের বলপূর্বক ধর্মান্তরকরন থেকে নিজেদের বাঁচাবার জন্য হিন্দুদের মধ্যে জাতিভেদ প্রথা দৃঢ়তর আকার ধারন করল। এইভাবে একদিকে মুসলমান, অপরদিকে পাশ্চাত্য দেশের চাপে যখন হিন্দু সমাজ দুর্বিসহ হয়ে পড়ল তখন স্বামী বিবেকানন্দের আবির্ভাব ঘটল। শ্রীরামকৃষ্ণের আশীর্বাদ ধন্য স্বামী বিবেকানন্দ । স্বামীজী ভবিষ্যতের নেতারূপেই নির্দিষ্ট হয়েছিলেন। তিনি ভ্রমন করলেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। ভারতের পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিনে কন্যাকুমারী ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে। ধর্ম সভায় তিনি গর্জে উঠলেন “জাগো হিন্দু জাগো”। তরুন সমাজকে উজ্জ্বীবিত করলেন, শুধু ভারতবর্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় তিনি পাড়ি দিলেন আমেরিকা, ইউরোপ। শিকাগো ধর্মমহাসভায় বক্তৃতা রেখে বিশ্ব দরবারে হিন্দুত্বের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। আজকের এই তরুন সমাজ তাদের হাতে আগামী দিনের ভারতবর্ষ তাদের স্বামীজীর সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারাকে অনুসরন করতে হবে। তাঁর আদর্শেই জীবন গঠন করতে হবে। তাই স্বামীজীর অসংখ্য আদর্শবানী ও কিছু রচনা আমি এই বইটিতে সংগ্রহ করলাম। যা পঠন পাঠনে আজকের ছাত্র সমাজ, তরুন সমাজ একটি আদর্শ চিন্তাধারায় চলতে পা’রবে। আগামী দিনে এক নতুন ভারতবর্ষ গড়ে উঠবে।