সেও হিশেব মেলাতে পারে না বর্ডার থেকে এত গুলি আসে কেন? কেন কবরগুলো ভাঙনের মুখে পড়ে, কেন স্মৃতি চিহ্নটুকুও মিলিয়ে যায় পাহাড়ের দিকে। (আসমানি কবর) নৌকায় বসে এক সময় রহিম দুঃখভরা কণ্ঠে বলে, ‘রাম, তোরা হিন্দু বইল্যা তাও সংখ্যালঘু ছাতার তলে আশ্রয় পাস, আর আমাগোর কোনো ছাতাও নাই আশ্রয়ও নাই। (জগৎ বঞ্চিত সংখ্যালঘু) রাতে ওর চোখে ঘুম আসে না। ঘুমকে কেউ যেনো গলা টিপে মেরে ফেলেছে! ঘুমের মৃত লাশ পাহারা দিতে সজাগ থাকে মুক্তা! এই বুঝি কেউ লাশ ছিনিয়ে নিতে চায়! মুক্তা আপ্রাণ চেষ্টা করে ঘুমলাশ ও দেহলাশকে একত্রিত করতে। পারে না। (দেহ দুঃখফুল) ফুলের মতো হাসি মুখে ফোটে আছে কবরগুলো। তকতকে তাতানো তামার মতো রূপ! সবুজ ঘাসের গালিচা ফুঁড়ে এক একটা রঙিন আলপনা ওরা! যেন বুক উঁচু করা শখের পিরামিড! (নয়া কবরের উৎসব) কুৎসিত লোকটা চেঁচিয়ে বলল, থাম ছালার পো... খুব গলা ঝাড়ছিস? কী করবি তোরা হ্যাঁ...? মিছিল-আন্দোলনের স্বাদ এখুনি মিটে যাবে রে... হা হা হা... (ফিরে যাব রাজপথে) বৃদ্ধ পিতা কন্যার লাশ দেখে নিশ্চুপ বসে থাকে! বিশ্বাস ভেঙে কাঁচের টুকরোর মতো ধারালো ফলা হয়ে ওঠে। সেই ফলা অন্তরাত্মাকে কেটে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়! (ব্ল্যাক আর্ট) দু-এক দিন পরেই নতুন কবর খোঁড়া হবে, এই পুতুলকে সোমারা দেবতার নামে কবর দিবে। আর দেবতারা ওকে ঠেলে দিতে থাকবে খেটে খাওয়ার পথে। আর সভ্যতার মুখোশ পরা পশুরা ওর শরীর খুবলে খুবলে খাবে। (রক্তে ভেজা রহস্য পুতুল) সীমান্তবর্তী অন্য গ্রামের মতো নওদাপাড়ার লোকজনের অনেক স্মৃতির কুঠুরিতে জমে আছে সীমান্তমৃত্যুর নানা ঘটনা। যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে উত্তরে কারোর পরিবারের কেউ, কারোর প্রতিবেশি বা আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুর কথা বলবে। কেন এইসব মৃত্যু? কেন এইসব জীবনের মূল্য এত অল্প? (সীমান্তপরী)