যারা যুদ্ধে গিয়েছে তারা তো মাঠে ময়দানে মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছে। এলাকার বাকী মানুষ সবাই কমবেশী অলস জীবন-যাপনের মধ্যে আছে। আমাদের কাজ ছিল সারাদিন ভয়ের মধ্যে থাকা। গুলির শব্দ শোনা, পালিয়ে বেড়ানো, রাত হলে গোপনে ট্রানজিস্টারে জল্লাদের দরবার চরমপত্র শোনা। ৯ মাস পরে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১। ঠিক মাগরিবের আজানের কিছু আগে এক প্রতিবেশী এসে ব্যাঙ্গ করে বলল, ‘শুনছো, শালা পাকি বাহিনী গাট্টি-বস্তা নিয়ে আজ বিকালে সারেন্ডার করেছে।’ তারপর আগামী দিন থেকে বাসে-ট্রাকে-লঞ্চে-রাস্তায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাবলিকের সে কী উল্লাস শুরু হলো। বর্তমান থেকে অতীতে ফিরে গেলে আমার কেমন জানি মনের মাঝে একটা ভাব চলে আসে। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি হয়ত সে জন্য হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের মাথায় নজরুলের বাবড়ি চুল। মুখে রবি ঠাকুরের দাড়ি। গোঁফ যেন লালনের। মেয়েরা পিছিয়ে থাকবে কেন? মাথায় খাটো চুল। অজান্তা স্টাইলের শাড়ি। চারগিরা কাপড়ে ব্লাউজ। নামের শুরুতে খম আফম ইত্যাদি। এই লকব কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পরেই শুরু। তারুণ্য ক্ষ্যাপাটে হয়ে উঠেছে। নতুন কিছু করতে চায়। অস্থির এক সময় শুরু হল। সেই সময়ের একটি গান মন তুই চিনলি নারে মন মানুষ বিরাজ করে দিল ঈশ্বরে আমার...... বইয়ের কাজের জন্য যখন কলম ধরলাম। তখনই গানের লাইনগুলো মনে পড়লো। গানের সূত্র ধরেই এল মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ পবিত্র। পবিত্র বিষয় দিয়ে লেখা শুরু করাই শুভ। গানটি ছিল পরিবর্তনের গান। অস্থিরতার গান। সময়ের জনপ্রিয় গান। মন উথাল-পাথাল। মন বহু বর্ণের। মানে অনেক রঙের। মন কখন কী রঙ ছড়াচ্ছে তা কেউ জানে না। মন কখন কী ভাবছেকী করছে মন তা নিজেও জানে না। আমি-তুমি-আপনি সবাই তারি মাঝে হাবুডুবু খাচ্ছি। এই বইয়ের মধ্যে মনের এই ধারণাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। মন যখন যা চায় সেভাবেই লেখাগুলো এগিয়ে চলেছে। আছেবিজ্ঞান-মনস্তত্ত¡-আধ্যাত্মিকতা-ধর্ম-জ্যোতিষশাস্ত্র-যৌনতার কথা। যৌনতা হচ্ছে দুইয়ের মাঝে শারীরিক ও মানসিক যুদ্ধ। যুদ্ধ দুই দলের হয়। তবে যৌনতা যুদ্ধের মতো খোলামেলা নয়। যৌনতা বোধহয় একটু বেশিই এসেছে লেখাতে। ইচ্ছা করে বাদ দেইনি। থাক না অসুবিধা কি? জীবন চলার পথে প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় অনেক কিছুই থাকে। প্রয়োজন যার যেটা, আমরা সেটাই বেছে নিতে পারি। এবার নিজের সাথে নিজের মত করে চলুন মনকে নিয়ে মনের গল্পে প্রবেশ করি। মনের বিচিত্র ভূবনে সবাইকে স্বাগতম। স্রষ্ঠ মহান।