ফ্ল্যাপে লেখা কথা শিবরাম চক্রবর্তী (১৯০৩-৮০) তাঁর একশ বছরে পা দিলেন এবছর ,২০০৩ সালে। তাঁর জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি এই উপহার, তারই ১৩ টি কিশোর -উপন্যাসের মালা গেথে। সম্ভবত একেই বলে ‘গঙ্গা জলে গঙ্গাপুজো’। জরিপ নিয়ে দেখা গেছে ,আজকালকার ছেলেমেয়েরা শিবরাম বা শিব্রাম কাউকেই চেনে না। চক্রবর্তী বা চকরবরতিকেও না। অথচ একটা সময় ছিল যখন কোনো পত্রিকায় কি সাতিহ্য সাময়িকীতে শিবরাম চক্রবর্তীর রচনা থাকলে অণ্য সব রচনার পাশে সরিয়ে রেখে প্রথমেই সকলে পড়তেন তাঁর লেখা। কী থাকত সেখানে? থাকত অমলিন হাসি। তার মানে কি হবে এই যে, তিনি হাসির গল্প লিখতেন? না, ঠিক তা নয়। গল্প হয়তো মোটেই হাসির নয়, কিন্তু তবু হাসতে হয় বলবার গুনে। হর্ষবর্ধন নয় গোববর্ধন করতে পারে না এমন কাজ নেই। তাতে হাসি হাসবে কেন? ফ্ল্যাপে লেখা কথা শিবরাম চক্রবর্তী (১৯০৩-৮০) তাঁর একশ বছরে পা দিলেন এবছর ,২০০৩ সালে। তাঁর জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি এই উপহার, তারই ১৩ টি কিশোর -উপন্যাসের মালা গেথে। সম্ভবত একেই বলে ‘গঙ্গা জলে গঙ্গাপুজো’। জরিপ নিয়ে দেখা গেছে ,আজকালকার ছেলেমেয়েরা শিবরাম বা শিব্রাম কাউকেই চেনে না। চক্রবর্তী বা চকরবরতিকেও না। অথচ একটা সময় ছিল যখন কোনো পত্রিকায় কি সাতিহ্য সাময়িকীতে শিবরাম চক্রবর্তীর রচনা থাকলে অণ্য সব রচনার পাশে সরিয়ে রেখে প্রথমেই সকলে পড়তেন তাঁর লেখা। কী থাকত সেখানে? থাকত অমলিন হাসি। তার মানে কি হবে এই যে, তিনি হাসির গল্প লিখতেন? না, ঠিক তা নয়। গল্প হয়তো মোটেই হাসির নয়, কিন্তু তবু হাসতে হয় বলবার গুনে। হর্ষবর্ধন নয় গোববর্ধন করতে পারে না এমন কাজ নেই। তাতে হাসি হাসবে কেন? পায়, কারণ তাঁর কথা ভঙ্গি ও ভাষার কারুকাজ। বাংলাভাষায় pun সৃষ্টির অভিসংবাদিত সম্রাট তিনি। সেজণ্যেই শিবরামের লেখা গল্প নিজে পড়তে হয়, তবেই হাসা যায়, অন্যের মুখে শুনলে হাসি পায় না। কারণ তখন অন্যের বলায় হাস্যরসের উৎস ঐ বিশেষ ভাষা গাঁথুনি যে আলগা হয়ে যায়। বাংলা সাহিত্যে তাই শিবরামের উপমা শিবরাম নিজেই । তাঁর কোনো পূর্বসুরী নেই, উত্তরসূরিও নেই। বাংলা ভাষার রস উপলব্ধির করার জন্যে তিনি যে আসর সাজিয়ে সবাইকে ডাক দেন তাতে সাড়া না দিয়ে কারও উপায় নেই। একমাত্র অন্ধ ও বধির ছাড়া শিবরামের রচনার স্বাদ পাঠকের চোখ ও কানকে চাখতেই হবে। শিবরাম ছিলেন চিরকুমার। সারা জীবন থেকেছেন একই মেস বাড়ির একটি ঘর নিয়ে। বিচিত্র জীবন এবং অকল্পনীয় চারিত্রিক মাধুর্য। তাঁর কোনো শত্রু ছিল না। কিন্তু আবার এমন মিত্রও রেখে যান নি যিনি তাঁর অবর্তমানে তাঁর সৃষ্টি আগলে ধরে রাখবেন। তাঁর জীবৎকাল যে প্রজন্মকে তিনি মাতৃভাষার অনি:শেষ মাধুর্য ও বাঙালির রসিক চিত্তের স্বাদ চিনিয়েনিয়েছিলেন তাদের জগৎ আজ হাস্যহীন ,রসশূন্য। শিবরাম চক্রবর্তীর বই এরই মধ্যে যেন প্রত্নসম্পদ হয়ে গেছে। ‘কিশোর উপন্যাস সমগ্র’ আজকের পাঠকের মনে ও ঠোঁটে আগেকার সেই ভুলে যাওয়া হাসি ফিরেয়ে দেওয়ার এক বিনম্র প্রচেষ্টা শুধু।
সূচিপত্র * সম্পাদকের কথা * ভূমিকা * ইতুর থেকে ইত্যাদি * কলকাতার হালচাল * কাকাবাবুর কাণ্ড * কৃতান্তের দন্তবিকাশ * কে হত্যাকারী * চুরি গেলেন হর্ষবর্ধন * দাদু-নাতির দৌড় * প্রান নিয়ে টানাটানি * বর্মার মামা * বাড়ি থেকে পালিয়ে * বাড়ি থেকে পালিয়ের পর * হাতির সঙ্গে হাতাহাতি * অন্যরকম জীবন * লেখালেখির খতিয়ান
হায়াৎ মামুদের জন্ম ব্রিটিশ ভারতে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মৌড়া নামে আখ্যাত এক গ্রামে, ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের ১৭ আষাঢ় (২রা জুলাই ১৯৩৯) তারিখে । ১৯৫০ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অভিঘাতে মানসিকভাবে বিপর্যন্ত পিতার হাত ধরে চলে আসতে হয় ঢাকা শহরে । অদ্যাবধি সেখানেই বসবাস । স্কুল-কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেছেন এ শহরেই। পিএইচ. ডি. ডিগ্রি তুলনামূলক সাহিত্যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, প্ৰায় প্রৌঢ় বয়সে। রুশ ভাষা অল্পবিস্তর জানেন, অনুবাদের চাকরি করেছেন প্ৰগতি প্ৰকাশনে, মস্কোয়-সুদূর ও স্বপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নে বসে । দেশের অভ্যন্তরে চাকরি সর্বদাই শিক্ষকতার-প্ৰথমে কলেজে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে । বর্তমানে অবসর-জীবন যাপন করছেন। বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন শিশুসাহিত্যে । দেশ-বিদেশের সারস্বত সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ আছে । সমালোচনা, ছাত্রপাঠ্য বই ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ষাটেরও বেশি।