র লেখাঃ "ইমাম গাজ্জালী (রহ.) সূফী ও ধর্মতাত্ত্বিক রচনাসংগ্রহ ১ম খণ্ড" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এ ইমাম গাজ্জালী জন্ম গ্রহণ করেন ৪৫০ হিজরীতে খােরাসানের ‘তুস’ নগরে। তার পূর্ণ নাম আবু হামেদ মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-গাজ্জালী। খুব ছােটবেলাতেই তার বাবা মারা যান। তুস নগরের সেই প্রতিষ্ঠানেই গাজ্জালীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। একাডেমিক শিক্ষা জীবনে গাজ্জালী প্রধানত ‘ফিকাহ' এর ছাত্র ছিলেন। তার সে ফেকাহ শিক্ষা শুরু হয় এখান থেকেই। আহমদ ইবনে মুহাম্মাদ রাকানীর নিকট তিনি ফেকাহ শিক্ষা আরম্ভ করেন। প্রাথমিক শিক্ষার পর গাজ্জালী ফেকাহ পড়ার জন্য তুস থেকে জুরজান সফর করেন। সেখানে তিনি ইমাম আবু নছর ইসমাঈলীর নিকট দুই বছর পড়াশােনা করেন। এই সময় তিনি যে নােট নিয়ে ছিলেন, তাই 'আত্তালিক' নামে পরিচিত। ৪৭৬ হিজরীর দিকে গাজ্জালী তকালের এলেম চর্চার জন্য বিখ্যাত শহর নিশাপুর গমন করেন এবং সমকালের বিখ্যাত ফকীহ, আলেম ইমামুল হারামাঈনের দরস/পাঠচক্রে অংশ গ্রহণ করেন। ইমামুল হারামাঈনের নিকটও তিনি প্রধানত ফিকাহ পড়ে ছিলেন। তার নিকট পড়া অবস্থাতেই তিনি তার ফিকাহ বিষয়ক রচনা ‘আল-মানখুল’ রচনা করেছিলেন। ৪৭৮ হিজরীতে, ইমামুল হারামাঈনের মৃত্যুর পর তিনি ‘আল-মুআছকার’ এ চলে যান এবং সেখানে নানা বিতর্কে অংশ গ্রহণ করে জ্ঞানের মহড়া দিয়ে সেলজুকী ছালতানাতের উযীর নিজামুল মুলকের নজরে পড়তে সক্ষম হন। তার নিয়ােগেই গাজ্জালী ৪৮৪ হিজরী সালে তৎকালের মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বড় রাজ-বিদ্যালয় বাগদাদের ‘মাদরাসা নিজামিয়া’-তে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যােগ দান করেন। ৪৮৮ হিজরীর যুলক্বাআদায় নিজামিয়া মাদরাসার অধ্যাপনা ছেড়ে দেন এবং বাগদাদ ছেড়ে চলে যান। ৪৯৮ হিজরী যুলকুআদা পর্যন্ত দীর্ঘ দশ বছর তিনি একাকী পরিব্রাজক জীবন যাপন করেছেন। দামাসকাস, মিশর, আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেমসহ এই সময় তিনি নানা দেশ ঘুরে বেড়ান। এই সময়েই তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন। জেরুজালেমের মসজিদে আকসায় বসে এই সময় কালেই তিনি তার বিখ্যাত ‘এহইয়াউ উলুমিদ্দীন’ রচনা করেছিলেন। ৪৯৮ হিজরীতে, খােরাসানের উযীর ফাখরুল মালিকের চাপে তিনি নিশাপুরের নিজামিয়া। মাদরাসায় পুনরায় দরদান শুরু করতে বাধ্য হন। অনুমান করা যায় ৫০০ হিজরীতে উযীর ফখরুল মালিক বাতেনীদের হাতে নিহত হওয়ার পর তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে এসেছিলেন এবং বাড়ির পাশে একটি মাদরাসা এবং একটি সূফী সাধনালয় খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন। বাকি জীবন তিনি এখানেই কাটিয়েছেন। ৫০৫ হিজরীতে (রবিবার ১৪ ই জমাদিউস সানি-১৮ই ডিসেম্বর ১১১১ ইং) এক সুন্দর সকালে গাজালী ওফাত লাভ করেন।
Title
ইমাম গাজ্জালী (রহ.) সূফী ও ধর্মতাত্ত্বিক রচনাসংগ্রহ ১ম খণ্ড
মােহাম্মদ খালেদ জন্ম : ১৯৫২ সালের ২৯ নভেম্বরে, ঢাকায়। জন্মের মাত্র ১১ মাস পর পিতছায়া থেকে বঞ্চিত হন। এরপর নানা প্রতিকূলতায় ভাসতে থাকে তার শৈশব-কৈশরের দিনগুলাে। পিতা মাওলানা আব্দুল জলীল মাজাহেরী তার সমকালের ইসলামী বাংলা সাহিত্যের প্রবাদতুল্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। শিক্ষা : বাংলাদেশের উর্দু সাহিত্যের প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব মাওলানা আলতাফ হােসাইন সাহেবের নিকট উর্দু সাহিত্যের পাঠলাভ। শৈশবে তকালিন পুরনাে ঢাকার মােমেন মােটর কম্পানী মাদরাসায় মক্তব বিভাগে এবং পরবর্তীতে। লালবাগ বড় কাটারা মাদরাসা ও পৈতৃক নিবাস কুমিল্লার রাইপুর কে, সি হাইস্কুলে শিক্ষাগ্রহণ। দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় হেফজ সম্পন্ন। জামেয়া ইসলামিয়া মােমেনশাহীতে কয়েক বছর পড়াশােনা করার পর পারিবারিক নানা সংকটের কারণে শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি । পেশা : ১৯৭৭ সালে ঢাকার মাদরাসা-ই-নুরিয়ায় হেফজ বিভাগে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তার পেশাগত জীবনের শুরু। তারপর দীর্ঘ ৩১ বছর একই বিভাগে শিক্ষকতা। বর্তমানে কামরাঙ্গীর চর মদিনাতুল উলুম মাদরাসায় উক্ত পেশায় কর্মরত। লেখালেখি : ছাত্রাবস্থায় দেয়ালিকা সম্পাদনা করে লেখালেখির মশক শুরু। তৎকালিন মাসিক রহমতের সহ-সম্পাদনী। সাপ্তাহিক জাগাে প্রহরীর বিভাগীয় সম্পাদনা ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হাফেজ্জী হুজুরের রাজনৈতিক বক্তব্যের প্রধান প্রতিবেদক। তৎকালিন বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিকে নিয়মিত প্রচুর লেখালেখি। প্রথম মৌলিক বই হাফেজ্জী হুজুরের জীবনী মূলক গ্রন্থ ‘হাফেজ্জী হুজুর জীবনের ধাপে ধাপে (১৯৮২)। শিশুদের জন্য তার নিজস্ব কিছু কাজ রয়েছে। উদাহরণত ‘ছােটদের আউলিয়া কাহিনী’ ‘ছােটদের হযরত আবু বকর সিদ্দীক ‘ছােটদের হযরত উমর ফারুক'—ইত্যাদি। লেখালেখির এলাকায় তিনি প্রধানত অনুবাদক প্রথম অনুবাদ মাওলানা জাকারিয়া (রহ:)-এর ‘মৃত্যুর স্মরণ' (১৯৮৩)। অনুবাদ করেছেন এ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ৭১ টি বই। উলেখযােগ্য অনুদিত গ্রন্থ—'সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া ‘ওসওয়ায়ে রাসূলে আকরাম (স:)' নবীজী এমন ছিলেন’ ‘আউলিয়া কেরামের হাজার ঘটনা' ‘আশরাফুল জাওয়াব' নারী জাতির সংশােধন “তওবা” “তিনশত মােজেযা আহকামে । মাইয়্যেত কবর জগতের কথা' উম্মতের ঐক্য ‘তারীখুল ইসলাম' 'নারীর জীবন যেমন ‘উম্মতের মায়েরা যুগে যুগে খেলাফতে রাশেদা'—ইত্যাদি । লিখছেন এখনাে, অক্লান্ত ভাবে আমৃত্যু লিখে যাবেন—সব সময় এই উৎসাহ ও প্রতিজ্ঞা বােধ করেন, একান্ত আন্তরিকভাবে।