বই সম্পর্কে কবি আসমা খাতুনের অভিব্যক্তির সুনির্বাচিত ও সুপরিকল্পিত ভাষিক প্রকাশ ঘটেছে তাঁর কবিতায়। কবির লেখায় প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর চিন্তা-চেতনা ও কল্পনার বিস্তৃ অঙ্গন। সঙ্গত কারণে, আমাদের দৈনন্দিন যাপিত জীবনের বহুমাত্রিক প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি, নানা ঘাত-প্রতিঘাত, সঙ্গতি-অসঙ্গতির কাব্যিক প্রকাশ অনেকটা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে কবি আসমার কবিতায়। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যজগতে আসমা খাতুনের পদচারণা। তাঁর লেখা প্রথম কবিতার শিরোনাম ছিল ‘বড় ভাই’। আপনজনের প্রতি কবির অপরিসীম আন্তরিকতা, শ্রদ্ধাবোধ আর অতুলনীয় স্নেহ মমতার প্রকাশ ঘটেছে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আপন ভুবন’ -এ। প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। নারী জাগরণ নিয়ে তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘জাগো হে নারীজাতি’ প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে। কবির ভাষায়, নারী সমাজের নানাবিধ অসচেতনতা, অমানবিকতা, অবাঞ্চিত আচরণ, অশান্তিদায়ক কার্যকলাপ, বিশৃঙ্খল পরিবেশ সবই নারীদের সৃষ্টি এবং তার শিকারও হয় নারীরা। ‘পারের কড়ি’ তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। কবির ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার বিহঃপ্রকাশ ঘটেছে পারের কড়ি কাব্যগ্রন্থে। চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘ব্যথিত বদন’। নিজের ও তাঁর নির্বাক সন্তানের দুঃসহ বেদনার প্রতিফলন ঘটেছে চতুর্থ কাব্যগ্রেন্থে। কবির পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ ‘কত না আপন’ প্রকাশকাল ফেরুয়ারি ২০১৯। একজন শিক্ষিকা হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর মাতৃসুলভ স্নেহ-ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে এই কাব্যগ্রন্থে। একজন জন্মদাত্রী মা যদি কর্মজীবী হন, তবে তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবন কেমন হতে পারে, তারই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে কবির ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘কী দিব জবাব’ -এ। প্রকাশিত হয় তাঁর সপ্তম কাব্যগ্রন্থ ‘করোনাকাল’। মানবজীবনের সুখ-স্বপ্ন, স্বপ্নভঙ্গের বেদনা, আদর্শ, মানবিকতা ও আধ্যাত্ম ‘করোনাকাল’ কাব্যগ্রন্থের মূল উপজীব্য। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় গ্রন্থটি।