ভূমিকা কখনো-কখনো নিজের দেশটাই একটা গল্প হয়ে ওঠে। আমরা সেই গল্পকে ভালোবাসি, কারণ তা আমাদের স্বভূমি নিয়ে। আমরা আমাদের স্বভূমিকে ভালোবাসি সেই গল্পের জন্যই । এই গ্রন্থ এক স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর। গাজার প্রত্যুত্তর নামে এই বই গল্পকথার মাধ্যমে চিহ্নিত করেছে এবং স্মরণ করেছে একটি বিশেষ ঘটনার পঞ্চম বর্ষপূর্তি – গাজার ওপর সেই বৃহৎ সামরিক আক্রমণ যা ইজরায়েল ঘটিয়েছিল ২৭-এ ডিসেম্বর, ২০০৮ থেকে ১৮ই জানুয়ারি, ২০০৯-এর মধ্যে। এই আক্রমণের নাম দেওয়া হয়েছিল 'অপারেশন কাস্ট লিড’। এই বইয়ের গল্পগুলো গাজার তরুণ লেখকদের লেখা, ইংরেজিতে। গল্পগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা ফুটিয়ে তুলেছে প্যালেস্তিনীয় তারুণ্যের বয়ান – অনুবাদ বা অ-প্যালেস্তিনীয় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই। গাজার এই তরুণ কণ্ঠস্বরদের হত্যা করার চেষ্টা করেছে ইজরায়েল। গাজার প্রত্যুত্তর সেই চেষ্টার বিরোধিতা করে। শহিদদের জর্জরিত হওয়ার ইতিহাস নিয়ে যে তামাশা, তার প্রতিবাদ করে। তাদের ঝরানো রক্ত মুছে দেওয়ার, তাদের অশ্রুর পথ রোধ করার, তাদের চিৎকার মথিত করার যে প্রচেষ্টা, তার প্রতিবাদ করে। এই বই পৃথিবীকে দেখাতে চেয়েছে প্যালেস্তিনীয়দের সংকল্পকে হত্যা করার জন্য ইজরায়েল প্রতিনিয়ত সচেষ্ট হওয়া সত্ত্বেও তারা হার মানেনি। তারা যন্ত্রণা এবং মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। এই অন্ধকার সময়ে প্রতিদিন তারা খুঁজে চলেছে আশার আলো। তারা স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে। গাজার প্রত্যুত্তর প্রমাণ করেছে গল্প বলা হল বেঁচে থাকার উপাদান। গল্পের মাধ্যমে প্রতিবাদের ভাষা তৈরি হয়। গল্পের মাধ্যমে ইতিহাস আকার লাভ করে। এই বইয়ের একজন লেখিকা, সমিহা এলওয়ান, বিশেষভাবে লিখেছেন, ‘সাইবার স্পেস এক নতুন ধরনের কেন্দ্রীভূত ক্ষেত্র তৈরি করেছে যেখানে গল্প বলার প্রক্রিয়া সমানে ঘটে চলেছে। এই ক্ষেত্র প্যালেস্তিনীয়দের জন্য কিছু নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পেরেছে। আঁকড়ে থাকার এবং নিজেদের জায়গা তৈরি করার কিছু নতুন রাস্তা খুঁজে পেয়েছে তারা’।