সুফিবাদে নিগুর জ্ঞান এবং সমাজ সাহিত্য সংস্কৃতি কিছু অংশ
সুফিবাদে নিগূঢ় জ্ঞান সুফিবাদের উৎস ও স্বরূপ ― সুফিবাদে নিগূঢ় জ্ঞানের (Esoteric Knowledge) প্রধানতম উৎস পবিত্র কোরান। ইসলামি পণ্ডিত ও সুফিসাধকদের সঙ্গে পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের মতবাদগত যে ক্ষীণ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, তার যাবতীয় আলোচনা ও বিশ্লেষণ অন্তে বিশ্বাস ও চেতনার যে ধ্রুব সত্য নীরবে স্বীকার করতেই হয় - তা হল, মানবমনের মর্মমুখী জ্ঞানের চিরকালীন অহংকার। একদিকে যাপিত জীবনের যাবতীয় স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াসমূহ এবং অন্যদিকে মর্মমুখী চৈতন্যের স্বাভাবিক বিকাশ চিরদিনই পাশাপাশি সজীব থেকেছে। অজানাকে জানবার চিরকালীন আকাঙ্ক্ষা আর আর্তি নিয়ে সুফিরা অন্তরের ..উপলব্ধ সত্যকে যাচাই করে নিতে চেয়েছেন। চর্মচক্ষের সত্য বনাম জ্ঞানচক্ষের সত্য পাশাপাশি অবস্থান করেছে, প্রাণের সত্যকে মর্মের দৃষ্টিতে দেখবার ও বুঝবার প্রয়াস চালিয়ে গিয়েছেন সুফিরা। ফলে, মানুষের চিরন্তন, শাশ্বত ও স্বাভাবিক উপলব্ধিসমূহ সুফিরা বিশ্লেষণ করেছেন মর্মমুখী জ্ঞানের আধারে। হজরত মুহাম্মদকেই সুফিরা মনে করেছেন তাঁদের সর্বশ্রেষ্ঠ ও প্রথম সাধক হিসেবে। এশার নামাজের পর কিংবা হিরা পর্বতের গুহায় হজরত মুহাম্মদ দীর্ঘক্ষণ যে ধ্যানস্থ অবস্থায় থাকতেন, সুফিরা মনে করেছেন, ওই ধ্যানস্থ অবস্থা আসলে সাধনযোগের চূড়ান্তক্ষণ এবং কোরানের শিক্ষার মূল রহস্য লুকিয়ে আছে সেখানেই। ইসলামে শরিয়তি শিক্ষার পাশাপাশি তরিকত শিক্ষার গুরুত্বও অসীম। মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তাঁর নির্বাচিত চারজন খলিফার মধ্যেও ইসলামের মর্মমুখী জ্ঞানের আদর্শ ও প্রচার লক্ষ করা যায়। ইসলামে কর্মবাদের সঙ্গে মর্মবাদের গুরুত্বও তাঁরা নির্দেশ করেন। একসময় কর্মবাদ বনাম মর্মবাদ দ্বন্দ্ব তৈরি হয়; মুসলমানদের মধ্যে বিলাসিতা, অমিতাচার ও ঐহিকতা ক্রমে বেড়ে চলে, মর্মের দিকে ধাবিত মানুষের সংখ্যাও কমতে থাকে। প্রদীপের শেষে শিখাটুকু জিইয়ে রাখলেন যাঁরা তাঁরাই সুফি নামধারী সাধক। ড. এনামূল হক মন্তব্য করেন: “কর্মের পথে যখন বিশেষরূপ বাড়াবাড়ি চলিল মর্মের পথেও একটু বাড়াবাড়ি চলিতে লাগিল, একটি নতুন প্রতিক্রিয়া