চট্টগ্রামেই আজন্ম লালিত, স্থায়ী নিবাস এবং জন্ম ঐতিহ্যবাহী পাথরঘাটার পাঁচবাড়িতে। এই বাড়ির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেই বেড়ে উঠা। তাঁর ঝিনুক কুঁড়ি খেলাঘর ও পাড়ার প্রতিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ছিল। পরবর্তীতে রাজনৈতিক আবহে জড়িয়ে পড়েন। ৯০ এর গণ-আন্দোলনে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের মদদে লালদিঘীর পূর্বপ্রান্তে ঘটে যাওয়া নৃশংস ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী। পরবর্তীকালে তারই অভিজ্ঞতা নাটকে পরিস্ফূটন হয়। তিনি একাধারে মঞ্চকর্মী, নাট্যকার ও নাট্য নির্দেশক। তিনি ১৯৮৬ সালে মামুনুর রশিদ রচিত এখানে নোঙ্গর নাটকের নির্দেশনা দিয়ে নির্দেশনার কাজ শুরু করেন, ১৯৮৭ সালে তিনি আবদুল্লাহ আল মামুন রচিত ‘চারিদিকে যুদ্ধ' নাটকটি নির্দেশনা দেন, হঠাৎ করেই সংগঠনের প্রয়োজনে নাটক লিখার তাগিদ এবং ১৯৮৮ সালে প্রথম পথ নাটক রচনা, মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের উত্তরসূরীদের নিয়ে রচিত নাটক ‘এবং জারজ সন্তান' যা চট্টগ্রামের তখনকার দিনে আড়োলন তুলেছিলো এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ১২০ বারের উপর উক্ত নাটকের প্রদর্শনী হয়েছিলো এবং পরিবেশন করেছিলো 'পদক্ষেপ নাট্য অঙ্গন' চট্টগ্রাম। এরপর তিনি ছন্দ নাটক 'মহারাজার খতিয়ান ও সংগ্রাম' নাটক রচনা করেন, পরবর্তীতে তিনি ১৯৯৩ সালে নির্দেশনা দেন সেলিম আল দীন রচিত 'সংবাদ কার্টুন' নাটকটি, নাটকটি মুসলিম হল মিলনায়তনে প্রথম মঞ্চস্থ হয়, একই বছর তিনি নির্দেশনা দেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'রাজা ও রাজদ্রোহী' এবং তিনি রচনা করেন পথ নাটক 'প্রহসন' ১৯৯৫ সালে তিনি নির্দেশনা দেন মনোজ মিত্র রচিত 'শ্রী চোখে আঙ্গুল দাদা' একই বছর তিনি আরো তিনটি নাটকের নির্দেশনা দেন প্রথম দুটি নাটক নিজেরই রচিত 'শুধু বিষ' ও 'ভালোবাসা অতঃপর' এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাস্তি গল্পের নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় নাটক 'শাস্তি' ১৯৯৬ সালে তিনি রচনা করেন পথনাটক 'ভুল', তিনি ১৯৯৭ সালে তিনটি নাটকের নির্দেশনা দেন প্রথমটি স্বরচিত নাটক 'ফতোয়া' দ্বিতীয়টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'মুকুট' তৃতীয়টি রবি ঠাকুরের 'শেষের রাত্রি', ১৯৯৮ সালে নির্দেশনা দেন মনোজ মিত্রের 'তেঁতুলগাছ', ১৯৯৯ সালে তিনি তিনটি নাটকের নির্দেশনা দেন প্রথমটি মনোজ মিত্রের ‘আকাশ চুম্বন' দ্বিতীয়টি সমরেশ মজুমদার রচিত নাটক 'থার্ড আই' ও তৃতীয়টি মমতাজউদ্দিন আহমদ রচিত নাটক 'স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা'। এরপর কিছুকাল বিরতি দিয়ে তিনি ২০০৫ সালে রচনা করেন নাটক 'মুক্তিযুদ্ধের কতকথা' ২০০৯ সালে নাটক 'মশা' এবং সর্বশেষে শ্রুতিনাটক পূর্ণিমা অতঃপর' নাটক ত্রয়ের নির্দেশনাও তাঁর। বিশ্বজিৎ চৌধুরী বাবু পদক্ষেপ নাট্য অঙ্গন, চট্টগ্রাম এর দল প্রধান এবং নাট্য নির্দেশনার কাজে ব্যাপিত থেকে এখনও নাটকের তথা সমন্বিত নাট্য আন্দোলন এর সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন আষ্টেপৃষ্ঠে, ইতিমধ্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ছোটগল্প 'শাস্তি' ও 'খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' এর নাট্যরূপ স্বনামধন্য নাট্য আলোচক, সংগ্রাহক, গবেষক ও নাট্যকার বাবুল বিশ্বাস সম্পাদিত ‘নাট্যরূপে রবীন্দ্রনাথ' (৬ খণ্ড) সংকলনে সন্নিবেশিত। এসব কটি নাটকই 'পদক্ষেপ নাট্য অঙ্গন' চট্টগ্রাম, প্রযোজনাই মঞ্চস্থ হয়।