ফ্ল্যাপ: ভালোবাসার মোহে আবদ্ধ হয়ে যে কণ্টকাকীর্ণ পথে মানুষ পাড়ি জমায় দিশাহীন প্রান্তরের উদ্দেশ্যে; যে নেশা মানুষকে তার স্বীয় অস্তিত্ব ভুলিয়ে দেয়, সেই ভালোবাসাকে কখনো কি কেউ চরিতার্থ করতে পারে? কিংবা মানুষ কি কখনো দেখা পায় সেই প্রকৃত ভালোবাসার— যার খোঁজে সে ছুটেছে হাজার বছরের পথ? অন্ধকার জগতের শহুরে ছেলেটা যখন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই অষ্টাদশী এক যুবতীর প্রেমে পড়ল, তখনও সে জানত না, ভালোবাসা আসলে কী! ঠিক একই প্রেম-রোগে আসক্ত পরিবারের কড়া অনুশাসনের বেড়াজাল ভেদ করে প্রেমিকের সাথে ভালোবাসায় নিমগ্ন থাকা মেয়েটাও আঁচ করতে পারেনি, কাউকে ভালোবাসার নেশা কতটা মারাত্মক হতে পারে! ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসতে না পারার পরিণতিটা তবে কী হয়েছিল? পারিবারিক আদর্শকে সমুন্নত রাখতে চাওয়া পিতা যখন সুশাসনের নামে দখলদারিত্ব বজায় রাখে। আর তাঁরই চোখকে ফাঁকি দিয়ে পরিবারের মেয়ে অন্য কোনো ছেলের সাথে কল্পিত পঁচাত্তর বছরের জীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখে— ঠিক ততক্ষণ পর্যন্তও কেউ ভালোবাসার মৌলিক রঙ খুঁজে পায় না। যে ভালোবাসা ঐশ্বরিকভাবে সৃষ্টি; যার প্রতিটা পরতে পরতে মিশে আছে সুখ-শান্তি আর পরম স্নেহ, সেই ভালোবাসার সুভাগমন ঘটে অনেকটা নাটকীয়ভাবে। কেমন হয়েছিল সেই নাটকের অনুচ্ছেদগুলো? সেই শহুরে ছেলেটা যখন নিষিদ্ধ এক চাওয়াকে পূর্ণতা দান করতে উঠে পড়ে লাগে, তখনই শুরু হয় দমকা বাতাস! আকাশ হতে ছুটে আসে গোটা গোটা বৃষ্টি ফোঁটা। আর তাতে যখন প্রত্যেকের জীবনের রঙ মিলিয়ে যেতে শুরু করে, ঠিক তখনই ঘটে যায় আমূল পরিবর্তন! তারপর সেই পরিবর্তনের রেশ ধরে ঘটে যায় নানা ঘাত-সংঘাত। উত্থানপতনের সুর বয়ে যায় গোটা শহর জুড়ে। বিচিত্র রঙে সাজানো জীবন ঘুড়ির রঙিন সুতো কেটে গিয়ে যখন নাটাই থেকে আলাদা হয়ে যায়, হারিয়ে যায় জাগতিক মিলবন্ধন; ঠিক তখনই সকলে উপলব্ধি করে জীবনের নীল সওগাত, নিগূঢ় সত্যের আখড়া! কোন সুতোটা কাটল তবে? আর কাদেরকেই-বা শেখাল জীবনের মর্মবাণী? অতঃপর সকলের চোখের কোণে জমিয়ে রাখা লবণাক্ত পানির স্রোতে কেটে যায় কালবৈশাখীর তাণ্ডব। মিটে যায় সব দুরাশা, শঙ্কা, টানাপোড়েন। আর দেখা মেলে একটা নূতন সকালের, কিন্তু রঙচটা সূর্যের আলোটা জানান দেয়, নতুন এক আখ্যানের। শেষটা তবে কী রকম হবে? পরিতৃপ্তির? নাকি রাত-দুপুরে ভেসে ওঠা বেদনার হইচই?
নাম ফাবিহা নওশীন। বাবা-মায়ের কনিষ্ঠ কন্যা। পিতার নাম শেখ মােঃ তাজুল ইসলাম। মায়ের নাম মাকসুদা বেগম। ১৭ই নভেম্বর তাঁর মায়ের কোল আলােকিত করে পৃথিবীতে আসেন। ঢাকা বিভাগ মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানায় তাঁর জন্ম। ছােট থেকেই পড়াশােনার প্রতি বেশ মনােযােগী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময় কাটানোর একমাত্র সঙ্গী ছিল, গল্প-উপন্যাস আর কবিতার বই। দিন দিন বইয়ের প্রতি ভালােবাসা যেন বেড়েই চলছিল। আর এই ভালােবাসা থেকেই মনের কোনে সুপ্ত কিছু স্বপ্ন জমা হতে থাকে। আর সেই স্বপ্নকে একদিন মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছেয় ছদ্মনামের আড়ালে কলম-কালিতে রূপ দিলেন। ছদ্মনামে অভ্যস্ত ও স্বাচ্ছন্দ্য বােধ করে পাঠকের অফুরন্ত ভালােবাসায় স্বপ্নটা আরও প্রসারিত হতে লাগল। ছুঁতে ইচ্ছে করল, বড় কোন প্রাপ্তি বইয়ের পাতায় নিজের কল্পনাগুলো ছুঁয়ে দেখার প্রগাঢ় ইচ্ছে জাগল! সেই ইচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার নয়, বন্ধু ও পাঠকের ভালােবাসায় সৃষ্টি হলে, প্রথম উপন্যাস 'প্রণয়াসক্ত প্রভাত'। লেখিকা বর্তমানে শ্রীনগর সরকারি কলেজে বিবিএ অধ্যয়নরত। তার কাছে নামটা এতটা প্রিয় হয়ে উঠেছে যে, এই নামেই তিনি পাঠকের কাছে পরিচিত হাতে চান ও তাদের ভালোবাসা স্পর্শ করতে চান। তিনি আশা করছেন, পাঠকদের ভালোবাসার উপহার স্বরূপ সৃষ্ট এই উপন্যাস পাঠকদের মনে জায়গা করে নেবে। প্রথম উপন্যাস 'প্রণয়াসক্ত প্রভাত'-এ পাঠকদের অফুরন্ত ভালােবাসা ও সমর্থন আশা করছেন। এবং পাঠকদের মনে জায়গা করে নিতে চাইছেন।