‘কবিতা’ শব্দটি শুনতেই খুব ভালো লাগে। হৃদয়ের অতলে অনবরত নাড়া দেয়, তাই না? মনের গহিনে লুকিয়ে থাকা এলোমেলো প্রতিটি শব্দের ছন্দিত সমষ্টিই যেন একটি কবিতা। কখনো এতে মিশে থাকে ভালোবাসার আবেগ, কখনো সুখ-দুখের হাজারো অনুভূতি, কখনো আবার এতে খুঁজে পাওয়া যায়, না বলা কথা আর অদেখা স্বপ্নের বাস্তব শব্দছবি। কবিতা মানেই স্বপ্ন রাজ্যের অন্য একটি জগৎ। আমার বিশ্বাস, কিছুক্ষণের জন্য হলেও ‘মিষ্টি প্রভাতী’ বইটি আপনাকে নিয়ে যেতে পারে তেমনই একটি জগতে। আপনি হারিয়ে যেতে পারেন ছন্দের অতল গভীরে। প্রতিটি পরতে পরতে পেতে পারেন নান্দনিক ভালো লাগার অন্যরকম একটি অনুভূতি। সম্পাদক দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বইটি সাজিয়েছেন অত্যন্ত সুচারু রূপে। অবশ্য বলাই বাহুল্য যে, বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তিনি সময়ের সেরা কবিদের শ্রেষ্ঠ কবিতাও স্থান দিয়েছেন এই যৌথ কাব্যগ্রন্থে। কবি ও কবিতাগুলো অমর হয়ে থাকুক মিষ্টি প্রভাতীর বুক জুড়ে, আর পাঠকের হৃদয়ে সদা উঞ্চতার পরশ বুলাক, এ কামনাই করি। ‘মিষ্টি প্রভাতী’ নামটি যেমন সুমিষ্ট, বইয়ের প্রচ্ছদটিও ঠিক তেমনই। নাম ও প্রচ্ছদের মতোই সৌন্দর্যের সিঁড়ি বেয়ে কাব্যগ্রন্থে থাকা প্রতিটি কাব্যই যেন অসীম সৌন্দর্যকে ধারণ করে রেখেছে। আপনার সুন্দর হৃদয়কে আরো শোভাময় করতে বইটি সহায়তা করবে বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাস করি। একটি কবিতা- পবিত্র বাসনা মধ্যরাতের শেষে, হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে গেল। প্রস্তুত হয়ে আমি দাঁড়ালাম, তাহাজ্জুদের আবছা আলোর জায়নামাজে, কিন্তু সুরা তেলাওয়াত করতে গিয়ে বুঝলাম— আমার চোখে তখনও প্রচণ্ড ঘুম, মুখ জড়সড় হয়ে আসছে তন্দ্রায়। এর মাঝেই আমি সেজদায় লুটিয়ে পড়লাম। দু'চোখ বন্ধ করে যখন পড়ছিলাম সুবহানা রাব্বিয়া’ল আ’লা, তখনই মনে হলো, ‘ইশ! এমন একটি তন্দ্রায় আচ্ছন্ন সেজদায়— আমি যদি চিরতরে ঘুমিয়ে যেতে পারতাম।’ পৃথিবীর চিরচেনা আলোতে না জেগে ওঠা চোখ যদি জাগ্রত হতেই দেখত একটি সুসজ্জিত উদ্যান, যার পাদদেশে বয়ে যাচ্ছে নয়নাভিরাম ঝরনাধারা। পানপাত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছেন পবিত্র সেবিকারা আর কিছু বুঝে ওঠার আগেই, সম্মানীত ফেরেশতারা বলে উঠতো, ‘সালাম আপনাকে স্বাগতম; অন্তত জীবনের চিরস্থায়ী সুখ জান্নাতে’।