কিছু কথা কিছু গান আছে'- আমার রক্তে মিউজিক। আমার রক্তে গান। এখনো গানের তালে নাচতে পারি অসাধারণ। জীবনে বোধহয় হওয়ার কথা ছিল শিল্পী। নায়ক হলেও হয়তো আমাকে ভালোই মানাতো। হাজার দুঃখ-কষ্টের যুদ্ধে হয়ে গেছি কবি। কিশোর বেলা থেকে শেখ ইশতিয়াক, লাকী আখন্দ, হ্যাপী আকন্দ, আজম খান, তপন চৌধুরী, আয়ূব বাচ্চু, কুমার। বিশ্বজিৎ, শুভ্রদেব, সোলস, ডিফরেন্ট টাচ্, ফিডব্যাক, মাইলস্, ফিলিংস কিংবা নগর বাউল- এই সব শিল্পীদের গানের সুরে তালে মাতাল থাকতাম। আর উচ্চ স্তরের শৈল্পিক শিল্পীর বড় তালিমের শিল্পীর বিষয় না-ইবা আনলাম। হাজার হাজার গান শুনেছি হৃদয়-কানে। গীত, বাদ্য, নিত্য একত্রে নিষ্পন্ন হলে একটা অসাধারণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়- শাস্ত্র তাকেই সঙ্গীত বলে। গান ভালবাসি তাই- আমি স্কুল জীবন থেকে প্রচুর গানও লিখেছি যেহেতু গান শিখিনি সেহেতু বিষয়টা অনেকটা গোপনে রেখেছিলাম। তবে শিশু-কিশোর বেলায় স্পিকার নিয়ে বেশ। কিছু মঞ্চে গান করেছি। আর ২৫/৩০ বৎসর আগের কথা, আমার সুরে কথায় গান চট্টগ্রাম বেতারে ঠিক ২০ এপ্রিল ১৯৯৪ সালে বেজেছিল। ওই পুরো অনুষ্ঠানটা ছিল আমার গ্রন্থনা, উপস্থাপনা, নির্দেশনায়। যাক, এইসব পুরানো কথা। “সঙ্গীতের সেরা মঞ্চ সা রে গা মা পা।" তাই মন-প্রাণ দিয়ে এই অনুষ্ঠান গানের আলোর লোকের দেখা উচিৎ। আবার গান শিখতে খুব প্রয়োজন হয়- শঙ্কর রায় সম্পাদিত রবীন্দ্র সঙ্গীত স্বরলিপি, ওস্তাদ মুনশী রইস উদ্দীন-এর ছোটদের সা রে গা মা, ও উস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া সঙ্গীত বিশারদ, বম্বে-এর আরোহ অবরোহ। উল্লেখ্য উপমহাদেশের এই বিখ্যাত উস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া মৃত্যুর পর লাশটা কোলাকুলি করে আমিও ঘর থেকে বের করেছিলাম। যাক এইসব কথা- গত এক বৎসর আগে ৩০/৩৫ বৎসর আগের ছেঁড়া পুরানো কাগজে ৬০/৬৫টি স্বরচিত গান খুঁজে পেলাম। এই সব স্বরচিত গান নিয়ে বই হবে, নাম দিয়েছি ছেঁড়া কাগজের গান। এমন নাম দেওয়া হল- ছেঁড়া কাগজের পুরানো গন্ধ ও ময়লা নিয়ে এখনো গানগুলো আছে। ছেঁড়া কাগজের গান স্বরচিত গানগুলো বেশিরভাগ-রচনাকাল হয়- ০২ আগস্ট ১৯৮৬ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৯৫ পর্যন্ত। কিশোরের শেষ থেকে তারুণ্যের শুরুর পথে রবীন্দ্রনাথ আড়াই হাজার গান রচনা করেছিলেন। বাল্যকাল থেকে কবি গুরুর কবিত্ব ও সঙ্গীতে প্রতিভা ছিল। তিনি বাংলা গানকে নতুন ধারাতে উপস্থাপন করেছিলেন। আমি নয়তো কিশোর ও তারুণ্যের শুরুতে ৬০/৬৫টি গান কোনভাবেই আবেগে লিখে ফেললাম! কৃতজ্ঞতা জানাই যাঁরা আমাকে এই বই বের করতে উসাহ দিলেন। এই গানের খাতা যেমনি প্রিয়, তেমনি আমার সন্তানদের আঁকার খাতাও প্রিয়। প্রাণের তাগিদে, হৃদয়বৃত্তির টানে এই গানের মাঝে মাঝে কিছু আঁকা ছবি দিলাম। যদি কারো ভালো লাগে তাতেই আমি মুগ্ধ। স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীতে এই বই প্রকাশিত হবে। সকলে এই করোনাকালে নিরাপদে থাকুন। বিদ্যুৎ কুমার দাশ কবি