হাইকু তিন পদ্ধতির ছোট্ট অনুভূতিপ্রবণ অনবদ্য রচনা। একেবারে-ই স্বল্পায়তন। তবে, স্বল্পায়ু নয়। অথচ ভাবসংযমের নিগূঢ় ছবি এইসব কবিতার স্বকীয়তা। হাইকু অনুষঙ্গময় নিসর্গ অনুভবের চকিত দোলা। ৫-৭-৫ জাপানি শ্বাসাঘাত মোরাস মিলে মোট ১৭ মোরাসের ধ্বনিবহুল চিত্রানুগত ক্যামেরার অন্বিষ্ট সারংরাগ। হাইকুর আবির্ভাব কাল সপ্তদশ শতকে। হাইকুর লেখক-কবিকে শব্দ-সংযমের ভেতর ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে হাঁটতে হয়। রিজোয়ান মাহমুদ, দীর্ঘদিনের নিরন্তর চর্চা ও অবিরাম স্বপ্নবিদ্ধ অভিজ্ঞতায় হাইকু তেপায়া ছুঁয়ে যাওয়া এক মানবিক অন্তরাত্মা। মূল হাইকু'র মোরাস ধ্বনি এবং নির্মাণশৈলী অক্ষুণ্ণ রেখে নৈসর্গিক সৌন্দর্য নিয়ে সাম্প্রতিকতম ক'রা হয়েছে এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত বহু হাইকুপদ। তিনি এখানে যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানব সংকট, সামাজিক ও রাষ্ট্রিক বৈপরীত্যে, দেহজ কামনা, ভোগবাদীতা, প্রেম, দ্রোহ সর্বোপরি এই উপমহাদেশের ক্লেদাক্ত রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত ক্ষমতার বিকারগ্রস্ত দুষ্কাল নিপুণ কৌশলে আঁকার চেষ্টা করেছেন। বলা যায় ১৭ মাত্রার এইসব হাইকু শুদ্ধি অভিযানে নির্মিত অনন্য এক তেপায়া তরণী। যার যাত্রীসকল আজকের এবং আগামীর। রিজোয়ান মাহমুদ আশির দশকের অন্যতম সক্রিয় একজন কবি। কবিতার গহন আকাশে তার অবস্থান আমরা প্রত্যক্ষ করে আসছি গত কয়েক দশক থেকে। এবার হাইকু আকাশে ভিন্ন মাত্রায়। উদিত হলো তার উজ্জ্বলতা। মনিরুল মনির