মাথায় ডিয়ারস্টকার হ্যাট। পরনে টুইডের ফ্রককোট। ঠোঁটে জ্বলন্ত পাইপ। হাতে ম্যাগনেফাইং গ্লাস। এই সব কিছু নিয়েই তিনি। শার্লক হোমস। বিশ শতকের সেরা লেজেন্ড। কিং আর্থার কিংবা রবিন হুডের চেয়ে বয়সে ছোট হয়েও অনায়াসে ছাপিয়ে গেছেন তাঁদের। বিপদে তিনিই একমাত্র ভরসা। তাঁর মগজাস্ত্রের ঝলকে একশো পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুগ্ধ করে চলেছেন সবাইকে। সঙ্গে বন্ধু ওয়াটসন। কে তিনি? নেহাতই ডাঃ ডয়েলের তৈরি এক কাল্পনিক চরিত্র? না গ্যাসবাতি জ্বলা, ঘোড়ায় টানা বোগী-ব্রুহ্যামে চড়া, কুয়াশাচ্ছন্ন লন্ডনের ২২১ বি, বেকার স্ট্রিটে বাস করা রক্তমাংসের এক গোয়েন্দা? শত শত গবেষকের হাজার হাজার গবেষণাপত্রতেও এ তর্ক মেটেনি। এখানেই তিনি অন্য সব গোয়েন্দাদের থেকে আলাদা, জীবন্ত। ‘গ্লোরিয়া স্কট’ থেকে শুরু করে ‘লাস্ট বাও’ অবধি তাঁর অদম্য যাত্রা। বাংলাও হোমসে মজেছে সেই পাঁচকড়ি দে-র “হরতনের নওলা” কিংবা কুলদারঞ্জনের “বাসকারভিল কুক্কুর” থেকে। কিন্তু হোমসকে নিয়ে সত্যিকার গবেষণা বিদেশে যত হয়েছে, ভারতে তার কণামাত্র হয়নি। ‘হোমস নামা’য় প্রথমবার দুই মলাটে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে ‘শার্লক’ নামের সেই প্রতিষ্ঠানটিকে, যার আবির্ভাবের পরে পৃথিবীটা আর আগের মত ছিল না। শার্লক হোমস, তাঁর স্রষ্টা, তাঁর সময়, সামাজিক ঘটনাপ্রবাহ, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সিনেমা, থিয়েটার, কমিকস, কার্টুন, বিজ্ঞাপনে হোমসের অতলান্তিক প্রভাব নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রয়েছে হোমস গবেষণা, ভিক্টোরীয় ইংলন্ডের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, যানবাহন, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড সহ অপরাধ বিজ্ঞানের নানা অজানা কথা, অচেনা বাঁক। এক কথায় এই বই সেই মানুষটাকে গভীরভাবে চেনাবে যার সামনে দাঁড়িয়ে তাবড় তাবড় লেখক, পরিচালক, আঁকিয়ে আর গোয়েন্দারা বলতে বাধ্য হন “গুরু, তুমি ছিলে বলেই আমরা আছি”।