কোন কোন মানুষ পৃথিবীতে আসে জীবন ও জগৎ সম্পর্কে অপার কৌতূহল আর মানুষের প্রতি ভালবাসা নিয়ে। সে ভালবাসে তার চারপাশের মানুষ ও প্রকৃতিকে এবং সাথে সাথে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষকে। বর্তমানে কর্মসূত্রে আমেরিকা প্রবাসী হলেও তার অন্তরে যে অনির্বাণ ভালবাসার শিখাটি জ্বলছে তার নাম.... বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এসব কিছুই তাকে ভাবায়। তাই যখন মুক্তিযোদ্ধা চাচার কাছে পাকিস্তানি সেনাদের অমানবিক, পাশবিক নির্যাতন ও নির্বিচারে হত্যার কথা জানতে পারে। তখন সে পিতাকে সরাসরি প্রশ্ন করে, কেন তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি? বাবা ছেলের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তখন সরাসরি না হলেও প্রতিটি মানুষ যে কতভাবে যুদ্ধ করেছে তা সে জানতে পারে। বাবা রাজনীতি করেন কিন্তু সেটা নিজের পকেট ভারী করার জন্য নয়, এলাকাবাসীর উন্নয়নে এবং তার প্রয়োজনে নিজের জমি বিক্রি করে হলেও। বাবার এই কাজে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে না করে খুশি হয় সে এবং তার পরিবারের সবাই। কৈশোর থেকেই ভ্রমণের নেশা তাকে তাড়িত করেছে। কখনো জেলে নৌকার মাঝিদের সাথে, কখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় সে ছুটে গেছে জীবনকে জানতে, মানুষকে জানতে কারণ মানুষ এবং প্রকৃতি তার বড়ো প্রিয়। বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী পতেংগা তার প্রিয় জন্মস্থান। পতেংগার মানুষ তার আত্মার অংশ। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে লেখাপড়া করেছে সেখানকার শিক্ষকদের প্রতি তার অপরিসীম শ্রদ্ধা। তাদের স্মৃতিচারণে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশে ফুটে উঠেছে তার বিনয় ও নম্র স্বভাব। এই যে আপাদমস্তক ভাল মানুষ দীদার, সে একজন লেখক। জীবন জীবিকার তাগিদে সময়ের বড় অভাব তবু যে স্মৃতি, যে দৃশ্য, যে সম্পর্ক তাকে আলোড়িত করে সেসব ঘটনা বন্ধু, স্বজনের সাথে ফেসবুকে লিখে শেয়ার করে। আমি তার লেখা পড়তে ভালবাসি, কারণ লেখার ভিতর দিয়ে খুব সহজে নিজের আবেগকে সে পাঠকের মাঝে সংবেদী করে। জীবনের বহুমুখী অভিজ্ঞতার সঞ্চয় তার ছোট ছোট এই গল্পগুলো এবার আরও বড় পরিসরে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য বই প্রকাশের এই উদ্যোগ। আমি এ প্রকাশনাকে স্বাগত জানাই। রিফাত আরা লেখক ও প্রাক্তন শিক্ষক, বিএএফ শাহীন কলেজ