কবিতা কি সময়ভাবনা? নাকি নির্দিষ্ট কোনও সীমারেখার বাইরে, আকাশের ওপারে আকাশ ভাবনার মতো কিছু? হয়তো তা-ই, এ সময়ের কবিতা পাঠ করলেÑ আমার পাঠক অন্তরেও এক-রকম রহস্যের চাদর, কল্পনার প্রভাব বিস্তার ঘটে। আর সেই মায়ায় জড়িয়ে মনে হয়, এ সময়ের কবিতায় বাস্তব ও অবাস্তব এই দ্বিমিশ্রিত সকল অনুভূতির ভিত্তি আছে। আত্মশ্লাঘা, শ্লেষ, অত্মযন্ত্রণা, দেশপ্রেম এবং একই সাথে কাব্যত্বের সাধনাও আছে। আবার এ-ও মনে হয়, এখনকার কবিতায় তেমন কোনও গভীরতা নেই। কিছুমাত্র তুচ্ছ ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে কবিতাগুলোকে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও, এসব কবিতা মারাত্মক থিমেটিক কিংবা ফর্মেটিভও মনে হয়। তাহলে আমি এতোক্ষণ যে ভূমিকায় কথা বলেছি, আলোচ্য সে স্বীকারোক্তি কেবল এ সময়ের কবিতায়ই নয়, একথা কবি সৈয়দ মেহেদী হাসানের কবিতার ক্ষেত্রেও সমানভাবেই প্রযোজ্য। কেননা, কবির ‘বলতে না পারার শোকে’ কাব্যগ্রন্থের পা-ুলিপির কাব্য আভিনিবেশ ও তার সারাৎসার ছিবড়ে নিংড়ে পড়ে তবেই আমার এ কথাগুলো মনে হয়েছে। হয়তো আমার অভিজ্ঞতায় তেমন ডিজিটাল চরাচর নেই। কিন্তু, কবি যখন বলেন, br>‘হাইড্রোফোবিয়ায় দ্রবিত সাহসের মূলে/খসে পড়লো শ্বাসনালী কিংবা বিবিধি প্রত্যয়’...তাহলে, মেহেদীর কবিতায় যে জটিল মানসিক স্তর রয়েছে, সেখানে হয়তো খুব সহজে পৌঁছাতে পরবো না আমরা। কারণ, কবির এমোন বেপরোয়া প্রত্যয় থেকেই বক্তব্যের গভীরতা ও তার কাব্যবোধের স্বরূপ অনেকটাই উন্মোচিত হয়। প্রকারন্তরে তার নগর ভাবনায় সময়ের অস্তিত্বের তন্ময়তার মধ্যে মন্ময়তার নিজস্ব আবহ ও আশ্রয় খুঁজে পাওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়। হয়তো তাই, মেহেদীর কবিতাÑ তার অন্তরের ক্রোধে যতোটা দেশ প্রেমের জোছনায় জ্বলজ্বলেÑ ততোটাই মিছিলের পায়ে পায়ে প্রমত্তা বলেশ্বর ও বিষখালি মোহনায় বয়ে চলা উৎপ্রেক্ষা-উপমায় শান্ত পরাবাস্তবতার মতো। কারণ মেহেদীর কবিতায় সৌন্দর্য ও আভিনবত্বের প্রবণতা আছে। যদিও সবটাই রাজনৈতিক কিংবা রোমান্টিকতা সর্বস্বও নয়...। br> br> হেনরী স্বপনbr> কবি ও লেখক, বরিশাল।br> ১৮.৯.২০২২