লেখকে ভূমিকা সকল প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালার জন্য। শান্তি, করুনা একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালার মনোনীত বান্দাদের প্রতি। পর কথা হলো, শিশু তোষ গল্প কাহিনী সিরিজের প্রথম খণ্ড ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। উহাতে ইবরাহীম আ. ও ইউসুফ আ. এর গল্প রয়েছে। প্রথম খণ্ডটি পাঠকদের নিকট আশাতীত গ্রহণ যোগ্যতা লাভ করেছে। বিভিন্ন ইসলামী পত্রিকায় জোরালো ভাষায় কিতাবটির প্রশংসা করেছে। কচি কচি শিশুরা এমন আগ্রহ উদ্দীপনার সাথে কিতাবটি পড়েছে যা ছিল লেখকের প্রত্যাশা তীত। আর এই কিতাব অধ্যয়ন কালে আমরা তাদের প্রদীপ্ত ললাটে এবং দীপ্তময় মুখের আনন্দ ও উদ্যেমের আলামত প্রত্যক্ষ করেছি। আর আমরা শোকর আদায় করেছি যখন শুনেছি যে, ছোটরা তাদের স্বল্প বুদ্ধি ও মেধা দ্বারা মুখস্ত করার পর ইবরাহীম আ. ও ইউসুফ আ. এর গল্প-কাহিনী অন্যদের নিকট আলোচনা করছে। এসবই আমাদেরকে এ পথে অগ্রসর হতে উৎসাহ যুগিয়েছে এবং শিশুতোষ নবীদের গল্প সিরিজ সমাপ্তে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা অল্প বয়সের এবং তাদের অভিভাবকদেরকে ছোটদের নবী রাসূল কাহিনী সিরিজের আরো একটি খণ্ড (২য় খণ্ড) উপহার দেবো। যাতে হযরত নূহ আ. হযরত হুদ আ. ও সালিহ আ. এর গল্প রয়েছে। এ সকল কাহিনীর মধ্যে বেশ কিছু তাফসীর বিষয়ক ও ঐতিহাসিক তথ্য এবং বিবেক উৎসারিত প্রচ্ছন্ন প্রশ্নমালার উত্তর ও রয়েছে।
অতএব, সন্মানিত শিক্ষকগণের খেদমতে আমাদের নিবেন, তাঁরা ছাত্র ছাত্রীদেরকে উক্ত গল্পসমূহ আলোচনা করতে বলবেন এবং তাদেরকে গল্পগুলো আবৃত্তি. মুখস্ত, পুনঃ পাঠ করার দায়িত্ব দিবেন। কেননা এ পদ্ধতি অনুসরণের দ্বারা বেশি উপকারিতা ও লাভের ব্যাপারে আমাদের বহু অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা করি যেন কিতাবটি আরবি ভাষার শিক্ষার্থী ও উঠতি প্রজন্মকে উপকৃত করেন। নবীদের ব্যক্তি জীবন তাদের জীবনের অনুসরণ তাদের পছন্দনীয় করেন। আল্লাহই তাওফীক দাতা। আমীন!
আল্লাহর পথের এক মহান দাঈ,ইলমে ওহীর বাতিঘর যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী। খাঁটি আরব রক্তের গর্বিত বাহক।বিশ্বময় হেদায়েতের রোশনি বিকিরণকারী।উম্মতের রাহবর ও মুরুব্বি। কল্যাণের পথে আহ্বানে চিরজাগ্রত কর্মবীর। জন্ম ১৯১৪ ঈসাব্দে। ভারতের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌর রায়বেরেলীতে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আদ্যোপান্তই দারুলউলুম নদওয়াতুল উলামায়। অধ্যাপনা জীবনের সিংহভাগও এই প্রতিষ্ঠানে নিবেদিত ছিলেন। আল্লামা নদভীর খ্যাতির সূচনা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে "সীরাতে সাইয়েদ আহমদ শহীদ" রচনার মাধ্যমে।গ্রন্থটি গোটা ভারতবর্ষে তাকে পরিচিত করে তুলে।এরপর তিনি রচনা করেন 'মা যা খাসিরাল আলামু বিনহিতাতিল মুসলিমিন' (মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারাল) নামক কালজয়ী গ্রন্থ।যা তাকে প্রথমত আরববিশ্বে ও পরবর্রতীতে বৈশ্বিক সুখ্যাতি এনে দেয়। এ পর্যন্ত গ্রন্থটির শতশত সংস্করণ বের হয়েছে। বিগত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে তার কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরদীপ্ত অধ্যায়গুলোর ইতিবৃত্ত। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তার অবাধ বিচরণ। উর্দু থেকে তার আরবী রচনায় যেন অধিকতর অনবদ্য। আল্লামা নদভী জীবনে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনি তার শ্বীকৃতিও পেয়েছেন। মুসলিম বিশ্বের নোবেল হিসেবে খ্যাত বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে দুবাইয়ে তিনি বর্ষসেরা আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হন।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টারের পক্ষ থেকে আলী নদভীকে সুলতান ব্রুনাই এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। আন্তর্জাতিক বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি একাধারে রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি ছিলেন। লাখনৌর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুলউলুম নাদওয়াতুল-উলামা' এর রেকটর ও ভারতীয় মুসলনমানদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম মুসলিম পারসোন্যাল ল' বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। ইসলামের এই মহান সংস্কারক ১৯৯৯ সনের ৩১ ডিসেম্বর জুমার আগে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াতরত অবস্থায় ইন্তিকাল করেন।