শিমুল শীল ১৯৬৭ সালের ৮ নভেম্বর ফটিকছড়ি উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া গ্রামে নরসুন্দর ও এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম যোগেন্দ্রলাল শীল ও মাতার নাম স্নেহলতা শীল। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে শিমুল শীল সবার ছোট। তার স্ত্রী পম্পী শীল, কন্যা শ্রাবন্তী শীল ও ছেলে হিমেল শীল। একটি সংগীতানুরাগী পরিবারে শিমুল শীলের জন্ম। তিনি পাঁচপুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফটিকছড়ি করোনেশন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও ফটিকছড়ি ডিগ্রি কলেজে পড়াশুনা করেন। তিনি ছোটবেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সংগীত, নজরুলগীতি ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে সংগীত জীবন শুরু করেন। পরে জারি, সারি, ভাটিয়ালী, পল্লীগীতি, ইসলামী গজল, আধুনিক, আঞ্চলিক, কাওয়ালী, শ্যামা সংগীত, নাম কীর্তন, গীতা পাঠ, মনসা পুঁথি পাঠসহ সংগীতের নানা ক্ষেত্রে নিজেকে মেলে ধরেন। স্কুল এবং কলেজ পড়াকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি নিমাই সন্ন্যাস নাটকসহ বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করে শেফালী ঘোষ, আয়েশা খাতুন, কান্তা নন্দীসহ অনেকের সাথে দ্বৈত কণ্ঠে গান পরিবেশন করেন। দেশে ও দেশের বাইরের অনেক বরেণ্য শিল্পীদের সাথে দেশ বিদেশে তিনি একসাথে সংগীত পরিবেশন করেন। পরিবারের সেজো ভাই সুকোমল শীল ভালো গান করতেন। বড় ভাই আদেশ শীল ভালো বাঁশি বাজাতেন এবং একজন সংস্কৃতিপ্রবণ মানুষ ছিলেন। আর মেজো ভাই ধনা শীল একজন সুফি ঘরানার লোক ছিলেন। রাণী শীল, বাণী শীল, দেবী শীল ও বেবী শীল তাঁর এই চার বোনেরাও তাঁর সংগীত জগতের অন্যতম প্রেরণা। তাঁর সকল ভাইবোনদের অনুরাগেই তাঁর সংগীতে পথ চলা। তারপর অনেক জ্ঞানীগুণী ওস্তাদের সান্নিধ্যে এসে নিজেকে তিনি সমৃদ্ধ করেন এবং হয়ে উঠেন একজন কিংবদন্তী মরমী শিল্পী। সংগীত জীবনের শুরুতে ঝিনি দাশ ও স্বপন কুমার দাশের কাছে গানের প্রাথমিক পাঠ নেন। পরে এমএন আক্তার, আব্দুল গফুর আলী, সৈয়দ মহিউদ্দিন, জি কে দত্ত ও আর্য সংগীতের ওস্তাদজী মনোহরি বড়ুয়ার কাছে গানের তালিম নেন। শিমুল শীল এ জনপদে সংগীত প্রিয় মানুষের অতি প্রিয় একটি নাম। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের একজন তালিকাভুক্ত নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার সুরকার। তাঁর অনেক গান সুধী মহলে সমাদৃত। তাঁর একশতেরও অধিক গানের অডিও সিডি ভিসিডি বাজারে আছে। তিনি দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সংগীত পরিবেশন করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি কাসেম ভান্ডার দরবার শরীফ, মাইজভান্ডারী মরমী শিল্পী গোষ্ঠী, সুয়াবিল সিদ্ধাশ্রম মঠসহ অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম শিল্পী কল্যাণ সংস্থার সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদকও তিনি। তিনি চাটগাঁইয়া নওজোয়ান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মাইজভা-ারের শতবর্ষ পূর্তি সম্মাননা, শ্রী শ্রী রামচন্দ্র দেব সম্মাননা, মানবিক উৎসব লোকজ সম্মাননা, আবদুল গফুর হালী স্মরণানুষ্ঠান সম্মাননা, দুবাই রসুল কাইমা বাঙালি স্কুল সম্মাননা, তানজিলা মিডিয়া সম্মাননা, মোহনলাল দাশ ম্মৃতি সংসদ সম্মাননা, কাতার দোহা ঈদ পুনর্মিলনী সম্মাননা, বঙ্গবন্ধু জাতীয় শোক দিবস সম্মাননা, মানবাধিকার হিউম্যান রাইটস ফোরাম সম্মাননা, দুবাই-শারজাতে আরটিভির সৌজন্যে সম্মাননা, আকাশ তারা সংগঠন সম্মাননা, শ্রী শ্রী সিদ্ধাশ্রম মঠে সম্মাননা, ঢাকা ছায়ানটের বার্ষিক সম্মেলনে সম্মাননা, ভারতের শংকর মঠ মিশন সম্মাননা, প্রত্যয় একাডেমি সম্মাননা, কক্সবাজার লোকনাথ ধাম সম্মাননা, পূজা উদযাপন কমিটি সম্মাননা, চট্টগ্রাম বিনোদন সাংবাদিক সংস্থার সম্মাননাসহ প্রায় শতাধিক সম্মাননা লাভ করেছেন।