আল্লাহ তাআলার অপার অনুগ্রহ, যেই পবিত্র দ্বীনের সাথে আমাদের সম্পর্ক, যেই ভূখণ্ডের সাথে আমাদের সম্পর্ক, যে মহান ব্যক্তিবর্গের সাথে আমাদের সম্পর্ক তাদের জীবনদর্শন আমাদেরকে এ শিক্ষা দেয় না। আমাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছেÑ ক্ষণস্থায়ী এ দুনিয়া তো কাফেরের জন্য জান্নাত আর মুসলমানদের জন্য এটা কয়েদখানা। কয়েদখানায় তো কেউ ফুর্তি করে না। উল্লাস করে না। আমোদে থাকে না। সেখানে তো কারো স্বাধীনতা থাকে না। মনে চাইল কোথাও ঘুরতে চলে গেল। কিছু খেতে ইচ্ছা করল খেয়ে ফেলল। মনে যা চাইল ব্যস করে ফেলল। কোনো বাধা নিষেধ নেইÑ এগুলো তো জেলখানায় চলে না। জেলখানায় বিচরণ করবে, একটি নিয়মের অধীনে বিচরণ করতে হবে। খাবার-দাবার গ্রহণ করবে, সময়মতো পরিমাণমতো; এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কখনো কিছু খেতে মনে চায়, কিন্তু পাওয়া যায় অন্যটা। এক খাবার পছন্দ, কিন্তু দেওয়া হয় আরেক খাবার। কখনো কিছু পরিধান করতে মনে চায়, কখনো কোথাও ঘুরতে মনে চায়, কখনো কাউকে দেখতে মনে চায়, কিন্তু তা সম্ভব নয়। কারণ তুমি তো চার দেয়ালে আবদ্ধ। এটা দুনিয়া। এটা মুমিনের জন্য জেলখানা। এই একই দুনিয়া। কাফেরের জন্য কী? কাফেরের জন্য এটা মহা উল্লাসের কেন্দ্র। বিরাট সুসজ্জিত পার্ক। মনোরম উদ্যান। অবারিত সুযোগ সুবিধা। এখানে যা ইচ্ছে তাই করো। যা চাও খাও। যেভাবে খুশি ঘুরে বেড়াও। হাসি-তামাশায় মত্ত থাকো। আনন্দ-ফুর্তিতে গা ভাসিয়ে দাও। গতরে বসন থাকুক, না থাকুকÑ কোনো পরোয়া নেই। পশুর মতো জীবন হোকÑ কোনো সমস্যা নেই। কেউ বলা-কওয়ার নেই। এজন্যই দুনিয়া কাফেরের জন্য জান্নাত আর মুমিনের জন্য কয়েদখানা।