বইটি সম্পর্কে কিছু কথা:আলহামদুলিল্লাহ, আজকে আমি এমন একটি গ্রন্থের ভূমিকা লিখছি, যা আমার নিজের জীবনের জন্য পাথেয়, আর তা হচ্ছে সাইয়্যেদুল খালক মুহাম্মাদ সাল্লালাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী। যার সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “তোমাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর রাসূলের জীবনীতে উত্তম আদর্শ, তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতের আশা করে।” [সূরা আল-আহযাব: ২১] মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মুমিনের যেমন আদর্শ তেমনি আজ তিনি সারা বিশ্বের সকল মানুষের জন্যও আদর্শ। তাঁর জীবনী থেকে সকলেই উপকৃত হতে চায়। বিশ্বের অনেকেই তাঁর জীবনী দিয়ে সেসব গ্রন্থের সূচনা করেছেন, যা বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে লেখা হয়েছে। একজন সফল পরিচালক হিসেবে তাকে সকলেই স্মরণ করে, সফল রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাকে সকলেই বরণ করে, একজন সমাজপতি হিসেবে তাকে সকলেই অনুসরণ করে, একজন স্বামী হিসেবে সকলেই তাঁর মতো হতে চায়, একজন পিতা হিসেবে তাঁর অনুকরণ করতে সকলেই গর্ববোধ করে। আর মুসলিম, সে তো তাকে অনুসরণ করতে বাধ্য। মুসলিম তার আকীদা-বিশ্বাস তাঁর থেকে নিবে। ঈমান ও ঈমানিয়্যাত তাঁর থেকে ধারণ করবে। ইসলাম নিয়ে কীভাবে জীবন-যাপন করবে সেটা কেবল তাঁর থেকেই শিখবে। ইহসান কেবল তাঁর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে অর্জন করতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর আদর্শকে খোঁজ করা মুসলিমের ওপর কর্তব্য। তাঁকে ছাড়া অন্য কারও অনুসরণ করলে সে কর্ম বাতিল হবে বলে সে বিশ্বাস করে। কারণ কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা‘আলা ত্রিশোর্ধ্ব স্থানে রাসূলের আনুগত্য করতে বলেছেন। আর রাসূল স্বয়ং বলেছেন, ‘যে কেউ এমন কোনো কাজ করবে যা আমার আদর্শ মোতাবেক হবে না তা তার ওপর নিক্ষিপ্ত’। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী জানা ছাড়া কারও কোনো গত্যন্তর নেই। এমনকি কবরে গেলেও তাঁর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে, উত্তর দিতে না পারলে ছাড় পাবে না। সুতরাং তাঁর জীবনী সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করা প্রতিটি মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের পাথেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী অনেকেই বিস্তারিত লিখেছেন। যার মধ্যে অনেকেই এমনভাবে হারিয়ে গেছেন যে তা থেকে মৌলিক তথ্য নিতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। অনেক কিছুর জ্ঞান অর্জিত হলেও বিশুদ্ধ নবী জীবনী সম্পর্কে অজ্ঞই থেকে যায়। বিশেষ করে যদি অথেনটিক সোর্সের ওপর নির্ভর না করে তখন সেটি হয়ে যায় সমূহ বিপদের কারণ। অত্যন্ত আনন্দের বিষয়, সৌদী আরবের আয-যুলফি দা‘ওয়াহ সেন্টার ‘কিতাবুল মুসলিম’ নামে একটি বড় গ্রন্থ প্রণয়ন করে, যাতে মুসলিমের আকীদা, আমল, ঈমান, ইসলাম, ইহসান ইত্যাদি এমনসব বিষয়াদি অত্যন্ত সংক্ষিপ্তাকারে স্থান পেয়েছে। সেখানে ‘নবী জীবনী’ একটি অধ্যায় সন্নিবেশিত ছিল, যা তারা সেখানকার কোনো দা‘য়ীর মাধ্যমে অনুবাদ করিয়েছেন। আল্লাহ তাকে উত্তম জাযা দান করুন। গ্রন্থটি আমরা প্রথম আমাদের ‘ইসলাম হাউজ.কম’ এর ওয়েবসাইটে প্রদান করার জন্য সম্পাদনা করে প্রস্তুত করি। এর উপকারিতা বিবেচনা করে ও জাতির আপামর জনসাধারণের কাছে নবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরার প্রত্যাশায় আলোকিত প্রকাশনীর মালিক নয়ন আহমেদ প্রকাশ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। সেজন্য সেটি তার কাছে পেশ করা হলো। আল্লাহর কাছে দো‘আ করি, তিনি যেন এ গ্রন্থের মূল লেখক, অনুবাদক, সম্পাদক, শব্দ বিন্যাসক, প্রকাশক, পরিবেশক সকলকে কবুল করেন, এ গ্রন্থটিকে তাদের নাজাতের অসীলা বানিয়ে দেন। আমীন।