কী ভেবে লিখেছিলাম, কেন লিখেছি এবং পরবর্তীকালে কোনো কিছু লেখা আমেরিকার নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘ঠিকানা’তেও প্রকাশিত হয়েছে। এটাই আমার প্রথম আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। বিরামহীনভাবে শুধু আমার ভাবনাগুলো, অভিজ্ঞতার ঝুলি, এগিয়ে চলার বিচিত্র ঘটনাপ্রবাহ, পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘুরে দেখা অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নানা ধর্মের নানা বর্ণের মানুষ সবকিছুই আমাকে প্রেরণা দিয়েছে। বিদেশে দীর্ঘ সময় থাকা আমাকে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমার ভেতর থেকে কী যেন একটা তাগিদ তাড়া করে বেড়াত। সাংবাদিক পিতার একজন সামান্য সহায়তাকারী হিসেবে লেখালেখির দিকটা আমার জন্য নতুন নয়। আমি সবসময় পড়তে ভালোবাসি। হাতের কাছে যা পাই তাই নিয়ে মগ্ন হয়ে যেতাম অনায়াসেই। আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহের লাইব্রেরিতে বিভিন্ন বিষয়ের বইপত্র, পত্রিকা, আত্মজীবনী, স্বাধীনতা নিয়ে লেখা, বই, বাংলা সাহিত্যের নামকরা লেখকদের উপন্যাস সংগ্রহে আছে। এ ছাড়াও আছে আমার ধ্যান-ধারণা চালিকা শক্তি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং প্রিয় গানের বুলবুল কাজী নজরুল ইসলাম। যদি কেউ কোনোদিন আমার লেখা সংকলন পড়ার সময় আর সুযোগ পান তবে তাঁর কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ আমি লেখিকা নই। এত বড় আশাও করি না নিজেকে নিয়ে। শুধু নিজের ভেতরের ‘আমি’টাকে একটু আনন্দ দেবার মূল্যই এই দুরূহ প্রচেষ্টা। প্রকাশ কার্যক্রমে প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমার অত্যন্ত স্নেহের অনুজ কবি আবদুল হাই শিকদারকে। কন্যাসম দুই পুত্রবধূ সবসময় আমাকে নানাভাবে সাহায্য করেছে তাদের জন্য। আমার চারজন নাতি আয়ান, আদিয়ান, আদিব, আকিব-এর জন্য এই লেখা। ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ। লতিফা চৌধুরী ২৫.০৫.২০১৯, ঢাকা।
জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৪৬ সালে ময়মনসিংহ জেলার জামালপুরের এক সুন্দর গ্রামে, নানা বাড়িতে। দাদার বাড়ি শেরপুরে। পিতা মরহুম খোন্দকার আবদুল হামিদ আজীবন সাংবাদিকতা করেছেন। মা মরহুমা জেবুন্নেসা হামিদ। সুযোগের অভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি, কিন্তু নিজের অদম্য ইচ্ছা আর চেষ্টায় তিনি যথেষ্ট আলোকিত একজন ভালো মানুষ ছিলেন। নিজের জীবনের অতৃপ্তিগুলোকে ছেলেমেয়েদের মধ্যে পূর্ণতা দেখতে চেয়েছিলেন। পাঁচ কন্যা ও এক পুত্র-সবাই মেধাবী, উচ্চশিক্ষিত ও জীবনে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত। বাবা-মায়ের সহযোগিতায় লতিফা চৌধুরী লেখাপড়ার পাশাপাশি গান-বাজনা, খেলাধুলা আর ছোট ছোট সামাজিক কাজে অংশ নিয়েছেন। ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিক পাশ করে ইডেন কলেজ থেকে তিনি বিএ পাশ করেন এবং ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেন।