আত্মত্যাগ। আল্লামা ওয়াকিদী বলেন, আমার দুই বন্ধু ছিল। আমরা ছিলাম এক আত্মার মত। আমি একবার ভীষণ অর্থকষ্টের শিকার হই। ঈদ আসে। তখন আমার স্ত্রী আমাকে বলল, আমরা নিজেরা হয়ত অভাব অনটনে ধৈৰ্য্য ধারণ করবাে। কিন্তু বাচ্চাগুলাের জন্য কষ্টে আমার কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছে। তারা দেখবে প্রতিবেশীর বাচ্চাদেরকে নতুন পােশাকে সুসজ্জিত। আমার বাচ্চারা থাকবে পুরাতন ছেড়াফাড়া পােশাকে। আপনি যদি বাচ্চদের নতুন কাপড়ের জন্য চেষ্টা করতেন! | আল্লামা ওয়াকিদী বলেন, আমি আমার বন্ধু হাশেমীর কাছে আর্থিক অসচ্ছলতার কথা জানিয়ে পত্র লেখলাম। তখন তিনি এক হাজার দিরহাম ভরা একটি থলি মােহর মেরে আমার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। আমি এ অর্থ দিয়ে কী করব এ সিদ্ধান্ত না নিতেই আমার কাছে অপর এক বন্ধুর পত্র আসল। তারও আমার মত আর্থিক সমস্যা। তখন আমি সেই থলিটিই পাঠিয়ে দিলাম। আমি মসজিদে যেয়ে সেখানেই রাতযাপন করলাম, স্ত্রী কি বলে সে লজ্জায়। এরপর যখন আমি স্ত্রীর কাছে যেয়ে বিষয়টা জানালাম, তখন সে ভালই বলল। আমাকে এর জন্য কোন তিরষ্কার করল না। এরই। মধ্যে আমার কাছে বন্ধু হাশেমী হুবহু সেই থলিটি নিয়ে আসলেন। এসে বললেন: তুমি যখন আমার কাছে আর্থিক অসচ্ছলতার কথা জানিয়ে পত্র লেখলে। তখন আমার কাছে এই একহাজার রােপ্যমুদ্রাই ছিল। আর কোন সম্পদ আমার ছিল না। আমি নিঃস্ব হয়ে আমাদের সে বন্ধুর কাছে পত্র। লেখলাম আর্থিক অসচ্ছলতার কথা জানিয়ে। তখন সেও হুবহু তােমার। দেওয়া থলিটি আমার কাছে পাঠিয়ে দিল। অর্থাৎ, আমারটা আমার কাছেই ফেরৎ আসল। এরপর আমরা তিন বন্ধু এক হাজার দিরহাম ভাগ করে নিলাম। এ সংবাদ বাদশা মামুনের কাছে পৌঁছলে আমাকে ডাকলেন। আমি তাকে বিষয়টি খুলে বলি। তখন তিনি আমাদেরকে সাত হাজার স্বর্ণমুদ্রা দিলেন। প্রত্যেকের জন্য দুই হাজার আর আমার স্ত্রীর জন্য একহাজার।। রাসূলে কারীম সা. ইরশাদ করেন, বান্দা যখন অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসে তখন আল্লাহপাক সে বান্দার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। উক্ত ঘটনা দ্বারা তাই প্রমাণিত হলাে।