উস্তাযা নায়লা নুযহাত এর ২০১২ সন থেকে লিখতে থাকা হিফয যাত্রার এক টুকরো অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, গল্প ইত্যাদির সমন্বয়ে লেখা বই। নতুন একেকটা শহরে যখনই থাকার জন্য গিয়েছি, দেখেছি সেই শহরকে বুঝতে অনেকদিন লাগে। সেই শহরের মানুষের ভাষা ভিন্ন হলে তো কথাই নেই। বাসা নেয়া, বাজার করা, হসপিটাল কোথায় জেনে নেয়াইত্যাদি কাজগুলো কঠিন লাগে। এরকম পরিস্থিতিতে অপরিচিত এক শহরে যখন আমরা এমন কাউকে পেতাম, যিনি এই বিষয়গুলো জানেন, মনে হত যে সব কাজ অনেক সহজে হয়ে গেল ।জেনারেল লাইন এর পড়া থেকে হিফযের জগতে পদার্পণের সময়ে আমার অবস্থা ছিল অনেকটা সেই অপরিচিত শহরে থাকতে যাওয়ার মত। উৎসাহ দেয়ার কেউ নেই। সমস্যাগুলো বুঝবে এমন কেউ নেই। হিফযের সহজ এবং প্র্যাকটিক্যাল পন্থা দেখিয়ে দেয়ার কেউ নেই। সবচেয়ে বড় কথা, আমার সমস্যার কাস্টমাইজড সমাধান দেয়ার কেউ নেই। ইন্টারনেট ঘেঁটে হিফয সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করা, নিজেকে নিজেই বয়ে বেড়ানো, কখনো চলতে পারা আর কখনো চলতে চলতেই বসে পড়া- এই সব নিয়েই ছিল আমার হিফযের সফর। একসময় সৌদি আরবের কুরআন স্কুলের সন্ধান পেলাম। সেখানে দেখলাম নতুন আরেক জগৎ! কুরআন মুখস্থ করার উদাহরণ অনেক পেয়েছি। কিন্তু কুরআনের সাথে পথচলা মানে কী, সেটা সেই প্রথম বুঝেছি।তখন থেকেই টুকটাক লেখার শুরু। কখনো এই আশায় যে, হয়তো কেউ অনুপ্রেরণা পাবে। কখনো এজন্য যে, হয়ত কোনো পদ্ধতি বা সমাধান কারো কাজে লাগবে। কখনো এই ভেবে যে, কুরআনের সাথে জীবন কতটা অপূর্ব তা তুলে ধরতে পারবো।২০১২ থেকে লিখতে থাকা টুকরো অভিজ্ঞতা- কখনো নিজের আর কখনো অন্যের, উপদেশ, হিফয স্কুলের বর্ণনা, অনুপ্রেরণামূলক গল্প- ইত্যাদি মিলিয়ে আজকের এই “কুরআনের সাথে পথচলা”।দোয়া করি আল্লাহ যেন এই প্রচেষ্টা কবুল করে নেন। আর এই যাত্রায় যা কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছে আমার তরফ থেকে, তা যেন ক্ষমা করে দেন।–নায়লা নুযহাত