ইমাম আবু হানিফা রহ. সম্পর্কে বিজ্ঞজনদের অভিমত 📎 ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইদরিস শাফিয়ি রহ. বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফিকহে পান্ডিত্য ও গভীরতা অর্জন করতে চায়, তাকে অবশ্যই ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর দ্বারস্থ হতে হবে।’ 📎 আবু ইউসুফ রহ. বলেন, ‘একদিন আমি আবু হানিফা রহ. এর সাথে হাঁটছিলাম। তখন এক ব্যক্তিকে অপর ব্যক্তির উদ্দেশে বলতে শুনেছি, “এই লোকটি হচ্ছেন আবু হানিফা। রাতে ঘুমান না তিনি।” তখন আবু হানিফা রহ. বললেন, “আল্লাহর কসম, আমার ব্যাপারে এমন কিছু বলা না হোক, যা আমি করি না।” (এর পর থেকে আবু হানিফা রহ. পুরো রাত জেগে সালাত, দুআ ও আল্লাহর দরবারে কাকুতি-মিনতি করে কাটিয়ে দিতেন।) এভাবেই তিনি বার্ধক্য পর্যন্ত আমল করেছেন।’ 📎 মুহাম্মাদ বিন জাবির রহ. বলেন, ‘আবু হানিফা রহ. খুব কম কথা বলতেন। যা জিজ্ঞাসা করা হতো, কেবল তার উত্তর দিতেন। খুব অল্প হাসতেন। অধিক চিন্তা করতেন। তার চেহারায় সব সময় চিন্তার রেখা থাকত। মনে হতো যেন কোনো বিপদে আক্রান্ত হয়ে আছেন।’ 📎 মাসউদি রহ. বলেন, ‘আমানত রক্ষায় আমি আবু হানিফার চেয়ে উত্তম আর কাউকে দেখিনি। মৃত্যুকালেও তার কাছে পঞ্চাশ হাজার অর্থসম্পদ গচ্ছিত ছিল। সেখান থেকে একটি দিনার বা দিরহামও নষ্ট হয়নি।’ 📎 আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহ. বলেন, ‘আমি আবু হানিফার চেয়ে সহনশীল এবং উত্তম বৈশিষ্ট্যমন্ডিত আর কাউকে দেখিনি।’ 📎 আলি বিন হাফস আল-বাজ্জাজ বলেন, ‘হাফস বিন আব্দুর রহমান আবু হানিফা রহ.-এর অংশীদার ছিলেন। একদিন আবু হানিফা তাকে ব্যবসার মালামাল প্রস্তুত করে দিচ্ছিলেন। তাকে খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দিলেন এবং বলে দিয়েছেন যে, “অমুক অমুক কাপড়ে সমস্যা আছে এবং বিক্রি করার সময় অবশ্যই বলে বিক্রি করবে।” কিন্তু হাফস বিক্রি করার সময় কাপড়ের সমস্যার কথা বলতে ভুলে গেলেন এবং বলতেও পারছিলেন না, কার কাছে বিক্রি করেছেন? আবু হানিফা রহ. যখন বিষয়টি জানতে পারলেন, সাথে সাথে পুরো কাপড়ের মূল্য সদাকা করে দিলেন।’ 📎 সাহল বিন মুজাহিম রহ. বলেন, ‘আবু হানিফা রহ. তার ভাইদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ছিলেন। সক্ষমতার সবটুকু ব্যয় করতেন তাদের জন্য। তিনি সব সময় বলতেন, “হে আল্লাহ, আমাদের দেখে যাদের হৃদয় সংকীর্ণ হয়ে আসে, তাদের দেখে আমাদের হৃদয় যেন তেমন না হয়। বরং তাদের জন্য আমাদের হৃদয়কে প্রশস্ত করে দিন।” 📎 আবু ইউসুফ রহ. বলেন, ‘একদিন আবু হানিফা রহ. আমাকে বললেন, “যখন আমি হাঁটা কিংবা দাঁড়ানো অথবা হেলান দেওয়া অবস্থায় থাকব, তখন আমাকে দ্বীনের কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসা করো না। কেননা, এসব অবস্থায় মানুষের বিবেক পরিপূর্ণ থাকে না।”