মহান আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করছি এজন্য যে, কওমী মাদরাসার তাকমিল জামাত (মাষ্টার্স)-এর শিক্ষার্থীদের জন্য ইমাম আবূ জাফর আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সালামাহ ত্বহাবী (রহ.) কর্তৃক সংকলিত অন্যতম হাদিসগ্রন্থ “ত্বহাবী শরীফ” (শরহে মা‘আনিল আছার)-এর অনুবাদ সংকলন প্রকাশ করতে পেরেছি। আমরা জানি ইসলামী জীবনাদর্শের দ্বিতীয় উৎস হাদিস বা সুন্নাহ। প্রকৃতপক্ষে, হাদিস হলো- প্রিয় নবী (সা.)-এর কথা, কাজ, সমর্থন ও অনুমোদন। আল-কুরআন মানব জীবনের জন্য যে চিরন্তন জীবন বিধান উপহার দিয়েছে হাদিস হচ্ছে তার জীবন্ত ও বাস্তব ব্যাখ্যা স্বরূপ। মহানবী (সা.) ছিলেন আল-কুরআনের জীবন্ত প্রতীক। তাই হাদিস বা সুন্নাহ হলো- ইসলামকে জানার ও বুঝার অপরিহার্য মাধ্যম। হাদিস বা সুন্নাহর জ্ঞান ছাড়া ইসলামকে জানার বিকল্প কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নাই। পূর্বে হাদিস শিক্ষার মাধ্যম ছিল মূলত আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষা। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। সকলস্তরে মাতৃভাষা বাধ্যতামূলক ঘোষণার পর বাংলা ভাষাকেই শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাদসারায় বাংলা ভাষার গুরুত্ব সমাধিকারভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই, তাকমিল জামাত (মাষ্টার্স)-এর পাঠ্য কিতাব হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কিতাব হচ্ছে- “ত্বহাবী শরীফ”। উল্লিখিত হাদিস গ্রন্থটির বর্তমান বাজারে ২/৩ খণ্ডে পাওয়া যায়। সকল ছাত্রের সুবিধার্থে আমরা এক খণ্ডে হাদিস গ্রন্থটি সংকলন প্রকাশ করতে ইচ্ছা করি। যাতে পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোকে অত্যন্ত সুবিন্যাস্তভাবে সাজানো হয়েছে। উক্ত গ্রন্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় আলোচনা ও ফিকহী মাসআলাসমূহ প্রাঞ্জল ও সাবলিল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন সকল ছাত্র মূল কিতাবের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও মাসআলাসমূহ সহজেই এক খণ্ডের মধ্যে পেয়ে যায়। গ্রন্থটি অধ্যয়ন করে সকল শিক্ষার্থীই ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করতে সমর্থ হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। মানুষ সীমাবদ্ধ জ্ঞানের অধিকারী। মানবীয় দুর্বলতা ও মুদ্রণজনিত ত্র“টির কারণে এ কিতাবে কোনো ভুল-ত্র“টি পরিলক্ষিত হলে সহৃদয় পাঠক আমাদেরকে জানালে পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধন করে প্রকাশ করব, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা এই কিতাব দ্বারা সকলকে উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন এবং এ ক্ষুদ্র খেদমতকে কবুল করুন। আমিন!