মহিলা বললো- তুমি দেখছি আগের মতোই রয়ে গেছো। এখনো এতো চুরুট টানো তুমি! এবার আরো অবাক হলাম তার কথায়! তখনও পর্যন্ত তাকে চিনতে পারি নি। কে সে? কেনই বা এতো প্রশ্ন করে বিব্রত করছে! -কি হলো কথা বলছোনা কেন? সচকিত হয়ে সম্বিত ফিরে পেলাম। ধীর স্বরে বললাম, - আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না তো! এবার সে পাশের টুল টা টেনে নিয়ে তার উপর চেপে বসে অনেকটা অবাক হবার ভঙ্গিতে বললো, - এই তো ১৫ টা বছর! তাতেই আমাকে ভুলে গেলে! তোমরা ছেলে রা পারও ভুলে যেতে। দেখো তো আমি এতোটা দিন পরেও তোমাকে চিনতে ভুল করিনি। বোকার মতো তার দিকে তাকিয়ে আছি। একজন কত পরিচিতের মতো কথা বলছে, আর আমি চিনতেই পারছি না! নিজেকেই কেমন জানি বিব্রত লাগছে। এবার চট করে সে বোরখার আবরনটা মুখ থেকে সরিয়ে বললো- দেখো তো, এবার চিনতে পারো কি না! এবার নির্দ্ধিধায় তার মুখের দিকে তাকাতেই বক্ষের বামপাশের প্রাণ পাখিটা যেন নড়েচড়ে বসলো। এইতো আঙুর ফোলা সেই মায়াবী হরিণের মতো চোখ, সেই আপেল বর্ণ অধর, চ্যাপ্টা চিবুক, ঠোঁটের বামপাশের কালো আঁচিল, বাঁশির মতো সরু সেই নাক, ঠোঁট দুটো যেন থরথর করে কাঁপছে। অপলক নেত্রে চেয়ে আছি তার দিকে। দু আঙ্গুলের ফাঁকে চুরুটটা কখন যে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলতে পারি না। হঠাৎ কন্ঠনালীর জড়তা ছুটে কাঁপা কন্ঠে মুখ গহ্বর থেকে বেরিয়ে এলো- মৌরী! তার দু কপোল বেয়ে ঝরে পড়লো দু ফোঁটা অশ্রু।
১৯৮৫ সালের ৩রা মার্চ। মনিরুল ইসলাম নওগাঁ জেলার অন্তর্গত সাপাহার উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা হযরত আলী ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ী সহকারী মৌলভী ও মাতা প্রয়াত মঞ্জুয়ারা। তিন ভাই বোনের মধ্যে কবি বাবা-মা’র প্রথম সন্তান। বাল্যকাল থেকেই পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন গুণী লেখকের বই পাঠে অভ্যস্থ ছিলেন তিনি। বই পড়ার নেশা থেকেই লেখা-লেখির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।লিখতে শুরু করেন অণু কবিতা, ছোটগল্প, হামদ-নাত। তৎকালীন “কিশোর কন্ঠ” নামক জনপ্রিয় মাসিক ম্যাগাজিনে কবির বেশ কিছু অণু কবিতা ও ছড়া প্রকাশ হয়। "শ্রাবণের বুকে বৃষ্টি" লেখকের প্রথম গল্পগ্রন্থ। এই গ্রন্থে ৬ টি গল্প রয়েছে। যেগুলো বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে লেখা।