শান্তিপ্রিয় গণতন্ত্র প্রিয় অতিমানবিক বাঙালি জাতি জন্মগতভাবে যুদ্ধবিদ্বেষী। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিলে এই যুদ্ধেরও জন্ম হতো না। বর্বর পাকিস্তান ক্ষমতা হস্তান্তরের অভিনয়ের ফাঁকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে সামরিক অভিযান চালিয়ে এক রাতেই দশহাজার মানুষ হত্যা করে ঢাকা শহরে আগুন লাগিয়ে। অকল্পনীয় এই হামলায় দিশেহারা হয়ে এক কোটি বাঙালি রাতারাতি ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়, আর তার পরেই বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সাহায্য নিয়ে ‘বাঙালির মাইর দুনিয়ার বাইর’ আর ‘জয়বাংলা’ হাঁক দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমরা দেখলাম মানুষের মঙ্গলে নিবেদিত সাদামাটা ভালো মানুষ সুব্রত বিশ্বাসকে মুক্তিযুদ্ধ কেমন করে আহার-নিদ্রা-বিশ্রামহীন মুক্তিযোদ্ধা নেতা বানিয়ে দিল। সদাজাগ্রত এই দুঃসাহসিক বুদ্ধিদীপ্ত প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ সুব্রত বিশ্বাস, মুক্তিযুদ্ধের স্বজাতি শত্রু এবং প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক চক্রান্ত শনাক্তকরণেও তাঁর জন্মগত পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। আমার ধারণা, সুব্রত বিশ্বাসের এ বইটি বাংলাদেশের জনগণকে আর একবার নিজেদের জাতিসত্তার দিকে মুখ ফেরাতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।