উম্মাহর নির্মাণ ও জাগরণে চার খলিফার জীবন, শাসন ও যুদ্ধের গুরুত্ব কতখানি, তা নতুন করে বলার নয়। যেহেতু তাঁরা আমাদের আদর্শ, তাই শুরু যুগ থেকেই তাঁদের জীবন ও খিলাফত বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে; যার কিছু কেবল গল্পের ধারাবিবরণী, স্বল্প ও সংক্ষেপ; কিছু ঘটনার অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণে ভরা, বিশদ ও বিস্তর। বলা বাহুল্য, ইতিহাসের পাঠ ও পর্যালোচনার মূল উদ্দেশ্য থাকে এমন এক ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, বর্তমানের পাতায় যেখানে দূর অতীতের প্রতিচ্ছবি দাঁড় করানো যাবে। অধুনা সময়ের উপযোগিতায় যেখানে রচনা করা যাবে ভবিষ্যতের পরিকল্পিত সিয়াসত। সর্বোপরি ইতিহাসকে নিরেট তত্ত্বের সংকীর্ণতা থেকে ব্যবহারিক জীবনের প্রশস্ত ময়দানে টেনে আনার প্রেক্ষাপট তৈরি করাই ইতিহাস রচনা ও পাঠের সারাতসার। তাই কেবল উপর্দৃষ্টির সাধারণ জানাশোনা উদ্দেশ্যের পক্ষে যথেষ্ট নয়। আবার সবিস্তার আলোচনা থেকে মূল শিক্ষা উদ্ধার সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি পাঠকের অন্যতম অবলম্বন হতে পারে। লেখক এখানে নিছক গল্পের অবতারণা যেমন করেননি, তেমনি অতিরিক্ত বিশ্লেষণে রচনার ধারা যাতে প্রলম্বিত না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক থেকেছেন। তিনি চেয়েছেন ইতিহাসের গল্পগুলো কেবল শিক্ষকের দর্শনে ও শিক্ষার্থীর কল্পনায় সীমাবদ্ধ না থেকে প্রজন্মান্তরের পালনীয় আদর্শ হয়ে উঠুক। তাই আশা করি শিকড়সন্ধানী সচেতন পাঠক গ্রন্থটি দ্বারা উপকৃত হবেন।