আমার কাছে সংরি‣ত এবং আমাকে লেখা বিভিন্ন জনের চিঠিগুলো নিয়ে বই বের করার সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করে গত ১লা অক্টোবর আমি নানুবাড়িকিশোরগঞ্ছ গমন করি। প্রকাশিতব্য বইটির কথা নানুবাড়ির স্বজনদের জানালে তারা অত্যন্ত খুশি হন। বড় মামা জানালেন তখন যে, তার কাছে এবং মেজো মামার কাছে বেশ কিছুচিঠিপত্র রয়েছে যা বিভিন্ন সময়ে নানুভাই, নানুমণি, আমার আম্মু, বড় খালামণি, ছোট খালামণি, ছোট মামা, তাদের বন্ধুগণ ও অন্যান্য স্বজনরা পাঠিয়েছিলেন। চিঠিগুলো প্রায় সব আশি—নবপ্তইয়ের দশকে লেখা। চিঠিগুলো আমি পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ পেলাম। মনটা এক অনির্বচনীয় আনন্দে নেচে উঠল। চিঠিগুলো গ্রন্থাকারে প্রকাশের ব্যাপারে মনে কোনো সংশয় সৃষ্টি হলো না। চিঠিগুলো আমি প্রকাশ করব এবং সেটা অচিরেই— এই চিন্তা মাথায় তৎক্ষণাৎ প্রবেশ করল। অনেক চিঠি পেলাম। প্রাথমিকভাবে প্রায় দেড়শ চিঠি বাছাই করলাম। বাছাইয়ের কাজে সাঈদা, আবদুল্লাহ সাহায্য করেছিল। বাড়িতে আসার সময় সেগুলো আমি নিয়ে আসলাম। বইয়ের নামের বিষয়ে কয়েকদিন চিন্তা করলাম। এটা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলাম। অবশেষে কাি․‣ত নাম খুঁজে পেলাম। এবার চ‥ড়ান্ত বাছাইয়ের পালা; কারো চিঠি যাতে বাদ না যায়, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখলাম। এবার ছিয়ানবপ্তইটি চিঠি সেখান থেকে বাছাই করলাম। এবার কম্পোজ শুরু করলাম যথারীতি আমার মোবাইল ফোন রিয়েলমি জিটি মাস্টার এন্ড্রয়েড সেটে। প্রায় বারো হাজার ওয়ার্ড টাইপ করেছি গ্রন্থটি লিখতে গিয়ে। ১৯৮৬—১৯৯৮ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে লিখিত এসব চিঠিপত্র। কতশত ঘটনাপ্রবাহ, আম্মু—আবপ্তুর বিয়ে, আমার—মুনিয়া—গালিব—মুহাম্মদের জন্মগ্রহণ করার কথা, আমিরুল ভাইয়া—রানু নানুর বিয়ে, গোসাইরহাটে নাসির ভাইয়া— রুমা আপু— নুরুল্লাহ নানার আগমন, এরকম অসংখ্য ঘটনা রয়েছে যা মূল চিঠি পাঠে জানা যাবে। কত সুন্দর করে লেখা চিঠিগুলো! কত সুন্দর করে গুছিয়ে আপন মনের ভাব প্রকাশ করা হয়েছে চিঠিগুলোতে। আমার স্বজনরা খুব উৎসাহ যুগিয়েছেন গ্রন্থটি প্রকাশের ব্যাপারে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইল। পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, যাদের পরো‣—প্রত্য‣ সহায়তায় আমি সুন্দরভাবে লেখার কাজটি বাসায় বসে সম্পাদন করতে পেরেছি। বাসার তিন পিি‧চ—রাফিয়া, ইরাম, ইনমার প্রতি ভালোবাসা। লেখার সময় ওরা আমাকে জ্বালাতন করে নি। বাসায় একাধিক টেবিল থাকা সত্ত্বেও ছোট বোন তাকিয়ার ফোল্ডিং টেবিলটি যখন—তখন এনে লেখার কাজ করেছি। এতে ও বিন্দুমাত্র বিরক্ত প্রকাশ করে নি। কৃতজ্ঞতা প্রিয় সহধর্মিণীর প্রতি। অসুস্থতাজনিত কারণে ও এখন পিত্রালয়ে অবস্থান করছে। তারপরেও লেখার কাজের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ—খবর নিয়েছে। আমার ব্যাপারে বরাবরই উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে। খাওয়া— দাওয়া, বিশ্রামের দিকে খেয়াল রেখেছে। অন্যান্য স্বজন, বন্ধু—বান্ধব, শুভাকা․‣ীদের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা যারা আমার লেখালেখির কাজকে সবসময় উৎসাহ প্রদান করে থাকেন। কৃতজ্ঞতা জানাই নব সাহিত্য প্রকাশনীর প্রকাশক ফজলুর রহমান বকুল ভাইকে। তিনি পঞ্চমবারের মতো আমার বই প্রকাশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আরিফ কম্পিউটার আই.টি ইনস্টিটিউট এর স্বত্বাধিকারী আরিফ হোসেনকে ধন্যবাদ জানাই। ওর আই.টি সেন্টারেই আমি স্ক্যানিং করেছি, লেখাগুলোকে সজ্জিতকরণ করেছি। স্ক্যানিং এর জন্য আমার জন্য আলাদা মনিটর এবং স্ক্যানারের ব্যবস্থা করেছিল জনাব আরিফ। স্ক্যানিং এর কাজে আই.টি সেন্টারের স্নেহের ওবায়দুর, অরুপ চক্রবর্তী, ইমতিয়াজ সাহায্য করেছে। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই ছোট ভাই সাবিপ্তর হোসেনকে।
কবি পরিচিতি: ইব্রাহিম নোমানের জন্ম শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। বাবা মশিউর রহমান এবং মা রেশমা আঞ্জুমান। স্থানীয় ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতেখড়ি। পঞ্চম শ্রেণিতে মেধাবৃত্তিসহ উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন । পরে তিনি পবিত্র কুরআনের হাফেজ হন। স্থানীয় আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন তিনি। বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। সাহিত্য এবং ইতিহাসের প্রতি তার টান প্রবল। বই পড়তে ও লেখালেখি করতে ভালোবাসেন তিনি। বৈচিত্রময় চরিত্রের অধিকারী কবি পছন্দ করেন গতানুগতিক জীবন যাপন এড়িয়ে চলার। মাকে হারিয়েছেন ২০০২ সালের ১২ই এপ্রিল। এটাই তার জীবনের বৃহৎ ট্র্যাজেডি হিসেবে তিনি মনে করেন। বাবার অনমনীয় দৃঢ়তা আর সমর্থনে তিনি জীবনের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। মহান সৃষ্টিকর্তার উপর অগাধ বিশ্বাস তার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে তিনি পরম সত্য বলে বিবেচনা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তিনি ২০১৬ সালে মাস্টার্সে পড়াকালীন পঠিত একটি কোর্সের জন্য একটি বই সম্পাদনা করেন। সম্পাদিত বইটি (সমকালীন মুসলিম চিন্তাবিদ) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সহায়ক পাঠ্যবই হিসেবে বিবেচিত। তার প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ হচ্ছে বিচিন্ত্য রচনাবলি (প্রবন্ধ গ্রন্থ), জলের অক্ষর ( কিশোর কাব্যগ্রন্থ), তুমি আমি একজন (সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ)।