নবী ও রাসুলদের মধ্যে অনেকেই ব্যবসায়ী ছিলেন। নবুয়তের দায়িত্ব পালন ছিল তাঁদের জীবনের মিশন। কিন্তু জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম ছিল ব্যবসা। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর মর্যাদাবান সাহাবিদের মধ্যে অধিকসংখ্যক ছিলেন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। অনেকে ছিলেন আরবের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। অনেকের ছিল আন্তঃদেশীয় ব্যবসা। আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারণা প্রচলিত আছে এবং উক্ত শ্রেণির লোকেরা মনে করেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করা দুনিয়াদারি, ইবাদতের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। পণ্যে ভেজাল, খাদ্য দ্রব্যে ফরমালিন মিশ্রণ, ওজনে কারচুপি ইত্যাদিকে তারা পাপ ও অন্যায় মনে করেন না। আলেম-ওলামাদের ব্যবসা করাকে অনেকে ভালো চোখে দেখেন না। ‘কুরআন-হাদিসের আলোকে ব্যবসার মর্যাদা ও ব্যবসায়ীদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচ্য গ্রন্থে বিশ্ববরেণ্য আলেম শাইখুল হাদিস আল্লামা যাকারিয়া (রহ.) এসব বিষয়কে কুরআন-হাদিস ও যুক্তির সাহায্যে বিশ্লেষণ করার প্রয়াস পেয়েছেন। এ গ্রন্থটি পাঠকের চোখ খুলে দেবে এবং প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণার অপনোদন ঘটাবে। বিজ্ঞ গ্রন্থকার চাকরি, কৃষি ও তাওয়াক্কুলের উপরও চমৎকার আলোচনা উপস্থাপন করেছেন, যা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। গ্রন্থের শেষের দিকে দেওবন্দি ওলামায়ে কেরামের কতিপয় চমকপ্রদ ঘটনা উল্লিখিত হওয়ায় সমাজে এর মূল্য আরও বাড়বে।
(২ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৮ – ২৪ মে ১৯৮২) তিনি ছিলেন দেওবন্দি ধারার একজন হানাফি পণ্ডিত। তিনি হাদিসের বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তার চাচা মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি ছিলেন সংস্কারমূলক আন্দোলন তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ফাজায়েলে আমল নামক গ্রন্থের লেখক। এটি উর্দুতে লিখিত হলেও অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে।[১][২][৩] তার জীবনীগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে হায়াতে শায়খুল হাদিস ও আপবীতি। মুহাম্মদ জাকারিয়া ১৮৯৮ সালে কান্ধলা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া। গাঙ্গোহ নামক স্থানে তিনি তার পিতার মাদ্রাসায় দশ বছর পাঠগ্রহণ করেন। ১৯১০ সালে তিনি মাজাহির উলুম শাহারানপুর মাদ্রাসায় শিক্ষালাভের জন্য আসেন। এই মাদ্রাসা দারুল উলুম দেওবন্দের সাথে সম্পর্কিত ছিল। তিনি তার পিতা ও মাওলানা খলিল আহমেদ শাহারানপুরির কাছ থেকে হাদিস শিক্ষালাভ করেন। ১৯১৫ সালে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি এখানে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় দেওবন্দ আন্দোলনের প্রসারে তার ভূমিকা রয়েছে।