শাহেনশাহ-এ-কাওয়ালি নুসরাত ফতেহ আলী খানের জাদুকরী কণ্ঠ সারা বিশ্বের শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিল। অত্যন্ত সরল, তবে যুগোপযোগী এই মানুষটি একা কাওয়ালি সংগীতকে বিশ্বদরবারে মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন। শত শত অ্যালবামের মালিক, যেগুলোর বিক্রি লাখে লাখে-নুসরাতের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সূফী-কবি ও মরমি সাধকদের বার্তা প্রচার করা। পাকিস্তান ও তার বাইরে প্রাচীন সূফী-সংস্কৃতিকে তিনি পরম ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতায় প্লাবিত আধুনিকতার সঙ্গে নবজীবন দান করেছেন। বরেণ্য এই কাওয়ালের জীবন নিয়ে লেখা বইটি ড. পিয়্যের-আলাঁ বো’র নিজস্ব বর্ণনা, এক দশকেরও বেশি সময় যিনি নুসরাতের খুব ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে কাটিয়েছেন। ১৯৮৫ সালে ফ্রান্সে তাঁর প্রথম কনসার্টগুলো শোনার পর থেকেই বিমোহিত ড. বো প্রায়ই এই শিল্পীর সঙ্গে ভ্রমণ করেছেন, সেই সঙ্গে ১৯৯৭ সালে তাঁর অকালমৃত্যুর আগ পর্যন্ত সারা বিশ্বে ও পাকিস্তানে বহু অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করেছেন। অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এই বর্ণনা সেসব ভ্রমণের নানান ঘটনা আর মহান এই শিল্পীর বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও সহকর্মীদের কাছ থেকে শোনা ছোটো ছোটো অনেক গল্পে সমৃদ্ধ। লেখকের মতে, নুসরাত হলেন ‘কণ্ঠের অভাবনীয় কারুকার্য প্রদর্শনকারী, অস্বাভাবিক নীরবতা, ঝলসানো দৃষ্টিতে বিঘ্নিত শ্রোতাদের সাথে ভাবের উদার আদান-প্রদানের ফসল এবং খুব কাছের মনে হলেও কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হলো তাঁর ব্যক্তিত্বের জাদু।’