মুখবন্ধ লেখালেখি করতে আমার ভালো লাগে, বিশেষ করে অবসর সময়ে। করোনাকালীন দীর্ঘ অবসর সময়ে আমি লিখেছি। মনের ভাব প্রকাশ করেছি কাব্যের মাধ্যমে; যিও কাব্যের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। তারপরেও লিখে চলেছি আমি। ইতোমধ্যে আমার অপেক্ষাকৃত ছোট প্রবন্ধসমূহের সংকলন এবং কিশোর উপযোগী একটি কাব্যগ্রন্থ পাঠক, অ—পাঠক উভয় শ্রেণির কাছেই পৌছেছে। সবার কাছ থেকে কবিতা লেখার উৎসাহ পেয়েছি এমনটি আমি নিঃসঙ্কোচে বলতে পারব না। কারণ কবিতা পাঠের প্রতি অনীহা কিংবা কবিতার বই কিনতে অনাগ্রহী লোকের সংখ্যা আমার সমাজে ঢের আছে। তারপরেও আমি লিখে চলেছি সময়টাকে ব্যবহার করার জন্য, নিজের মানসিক প্রশান্তির জন্য। অনেক লিখিত কবিতাগুলোর মধ্যে বেশ কিছুকে বাঁচিয়ে রাখার ত্যাগে সেগুলো গ্রন্থভূক্ত করার সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতিতে এই কাব্যগ্রন্থটির প্রকাশ। পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা আমার ভালো কাজে সবসময়ই উৎসাহ প্রদান করে থাকেন। পাশাপাশি স্বজন, বন্ধু, শিক্ষক, সহকর্মী, শুভাকাঙ্গীরা সকলের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। বিশেষ করে কৃতজ্ঞতা জানাই প্রিয় সহধর্মিণী সৈয়দা শারমিন নিশাতের প্রতি। বইটি বের করার ব্যাপারে ও বরাবরই অনুপ্রেরণা এবং সাহস জুগিয়েছে। কৃতজ্ঞতা জানাই নব সাহিত্য প্রকাশনীর প্রকাশক জনাব ফজলুর রহমান বকুল ভাইকে। তিনি তৃতীয় বারের মতো বইটি প্রকাশের সম্মতি জানিয়েছেন। পরিশেষে বলতে চাই, বইটি পাঠকের কাছে ভালো লাগলে এবং গ্রহণযোগ্যতা পেলে আমার মনে বাড়তি আনন্দ যোগ হবে। কবিতাগুলোর বিষয়ে যেকোনো গঠনমূলক আলোচনা —সমালোচনা আমি কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করব। বানানজনিত ভুলসহ যেকোনো ভুল পরবর্তী সংস্করণে শুধরে নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ সবার সহায় হোন। ইব্রাহিম নোমান গোসাইরহাট, শরীয়তপুর ১১ই জুন, ২০২২
কবি পরিচিতি: ইব্রাহিম নোমানের জন্ম শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। বাবা মশিউর রহমান এবং মা রেশমা আঞ্জুমান। স্থানীয় ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতেখড়ি। পঞ্চম শ্রেণিতে মেধাবৃত্তিসহ উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন । পরে তিনি পবিত্র কুরআনের হাফেজ হন। স্থানীয় আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন তিনি। বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। সাহিত্য এবং ইতিহাসের প্রতি তার টান প্রবল। বই পড়তে ও লেখালেখি করতে ভালোবাসেন তিনি। বৈচিত্রময় চরিত্রের অধিকারী কবি পছন্দ করেন গতানুগতিক জীবন যাপন এড়িয়ে চলার। মাকে হারিয়েছেন ২০০২ সালের ১২ই এপ্রিল। এটাই তার জীবনের বৃহৎ ট্র্যাজেডি হিসেবে তিনি মনে করেন। বাবার অনমনীয় দৃঢ়তা আর সমর্থনে তিনি জীবনের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। মহান সৃষ্টিকর্তার উপর অগাধ বিশ্বাস তার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে তিনি পরম সত্য বলে বিবেচনা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তিনি ২০১৬ সালে মাস্টার্সে পড়াকালীন পঠিত একটি কোর্সের জন্য একটি বই সম্পাদনা করেন। সম্পাদিত বইটি (সমকালীন মুসলিম চিন্তাবিদ) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সহায়ক পাঠ্যবই হিসেবে বিবেচিত। তার প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ হচ্ছে বিচিন্ত্য রচনাবলি (প্রবন্ধ গ্রন্থ), জলের অক্ষর ( কিশোর কাব্যগ্রন্থ), তুমি আমি একজন (সম্পাদিত কাব্যগ্রন্থ)।