الحمد لله رب العلمين والصلاة والسلام على نبينا محمد صلى الله عليه وسلم.
জান্নাত হলো আমার আসল ঠিকানা। জান্নাত আমার বাড়ী। জান্নাত আমার লক্ষ্য। জান্নাত আমার চিরস্থায়ী বাসস্থান। আর পৃথিবী হলো মাত্র কয়েক বছরের জীবন।
হে যুবক যুবতী! তোমাকে বলছি! তোমার বাড়ি পার্কে নয়। তোমার বাড়ি সিনেমায় নয়। তোমার বাড়ি এ চ্যাটিং করা নয়। তোমার বাড়ি এ নয়।
হে যুবক যুবতী! তুমি ভুলে গেছো তোমার আসল বাড়ির কথা। সেটা হলো জান্নাত। তুমি কি জান্নাতী আমল করেছো? তুমি এই পৃথিবীর কয়েক দিনের সময়কে আসল সময় মনে করে সব ধরনের পাপ কাজ করছো। শুনো হে দুনিয়ার মানুষ এই পৃথিবী তোমাকে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা স্বরূপ। এই দুনিয়ায় তোমার নেক আমল ও বদ আমল পরীক্ষার স্থান। তুমি কি জানো না শয়তান তোমাকে সর্বদা জান্নাতী আমল থেকে দূরে রাখে। সে তোমাকে জাহান্নামের আমলের দিকে সর্বদা ডাকে।
হে মানুষ তুমি কি চালাক নাকি বোকা? তুমি কি মনে করেছো! এই পৃথিবী তোমার আজীবনের স্থান? তুমি কি এই পৃথিবীতে এক লক্ষ বা কোটি বছর বাঁচবে? তুমি কি দুইশ বা তিনশ বছর বাঁচবে? তোমার হাতে গড়া বিল্ডিং টা কি পাঁচশ বছর তোমাকে নিয়ে থাকবে? তুমি কি তোমার ব্যাংক একাউন্টের কোটি টাকা নিয়ে হাজার বছর বাঁচবে? সবাই বলবে না না কখনও নয়।
তাহলে শোনো হে যুবক যুবতী! টাকা-পয়সা, ফ্ল্যাট ও প্লট, বাড়ি-গাড়ি, জমি- জমা, সোনা-রুপা ও সুন্দরী নারী তোমাকে তোমার আসল বাড়ি জান্নাত থেকে দূরে নিয়ে যাবে না তো ?
তাহলে শোনো, এইগুলোর মাধ্যমেই তোমাকে শয়তান তোমার আসল বাড়ি জান্নাত থেকে দূরে রাখবে। শয়তান তোমাকে দুনিয়ার বিষয়গুলোর মাধ্যমে তোমার আসল বাড়ি জান্নাত থেকে দূরে নিয়ে যাবে। আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীন জান্নাতকে এত সুন্দর করে বানিয়েছেন। যা মানুষ কোনোদিন কল্পনা করেনি, চোখেও কোনোদিন তা দেখোনি, এত সুন্দর জান্নাত আল্লাহ তায়ালা বানিয়েছেন যার গুণাগুণ বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।
সুতরাং আমাদের এমন কাজ করতে হবে যার মাধ্যমে জান্নাতে যেতে পারি। জান্নাতে যেতে হলে জান্নাতী আমল করতে হবে। আমরা দেখতে পাই কিছু মানুষ বলে যে ঈমান ঠিক থাকলে চলবে নামায-রোযা লাগে না। এইকথাটা ঠিক নয়। নামায ফরয বিষয়, তা আদায় করা সবারই উপর অত্যাবশ্যক। আবার কিছু মানুষ বলে ঈমান ঠিক নেই নামায পড়ে কী হবে। এই কথা ভেবে সে নামাজ পড়ে না। এটা একেবারে ঠিক নয়, ঈমান ঠিক করতে হবে নামাযও আদায় করতে হবে। আসল কথা হলো আমাদের নামায আদায় করতে ভালো লাগে না, মন চায় না তাই ওজর পেশ করে। প্রিয় কলিজার টুকরা ভাই ও বোনেরা চিন্তা করুন, কী জান্নাত আল্লাহ রেখেছেন আপনাদের জন্য। সুতরাং, কথা হলো এখনো সময় আছে নামায পড়া শুরু করুন। এ ছেড়ে আসুন। কখন আপনার এই দুনিয়া ছাড়তে হবে জানেন না। হতে পারে আগামীকাল আপনার মৃত্যুর খবর মসজিদের মাইকে এলান হবে।
তাই ফিরে আসুন জান্নাতের দিকে। যা আপনার আসল বাড়ি। দুনিয়ার বাড়ি কয়েক বছরের জীবন। জান্নাত হাজার হাজার বছরের জীবন। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইনতেকাল করেছেন চৌদ্দশ বছর আগে, আদম আলাইহিস সালাম ইনতেকাল করেছেন কয়েক হাজার বছর আগে। তারা সকলে জান্নাতের বাড়িতে। জান্নাতী আমল না করলে আপনি থাকবেন হাজার হাজার বছর জাহান্নামী বাড়িতে। আপনি ইচ্ছে করলেই নামায পড়া শুরু করতে পারেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তে সময় লাগে মাত্র আধা ঘন্টা। এই আধা ঘন্টার জন্য আপনি হাজার হাজার বছর জাহান্নামী। সব আপনার হাতে কি করবেন। চিন্তা করুন!
তোমাকে চাই হে জান্নাত যৌবন মানেই বন্ধু, আড্ডা, গান, মাস্তি নয়। মহান আল্লাহ ক্ষণিকের জন্য মানুষকে তাঁর এই বিশেষ নেয়ামত দিয়ে পরীক্ষা করেন। যারা তাতে উত্তীর্ণ হবে, তারাই সফল। আর যারা তা অবহেলা করবে, তারা চির ব্যর্থ। যে ব্যক্তি তার যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে ব্যয় করবে, কঠিন কেয়ামতের দিন সে মহান আল্লাহর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় পাবে। পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসূল (সা.) বলেন, “যেদিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে।
যুগে যুগে সব পাপ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুবকরাই দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি জাতির ইতিহাসেই দেখা যায়, তাদের মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুবকরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তেমনই এক যুবক ছিলেন, ইবরাহিম (আ.)। যিনি সর্বপ্রথম তাঁর গোত্রের মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের কেউ কেউ বলল, আমরা শুনেছি এক যুবক এই মূর্তিগুলোর সমালোচনা করে। তাকে বলা হয় ইবরাহিম।
মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপযুক্ত সময়ে বিশেষ বিশেষ নেয়ামত দান করেন। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জন্য সেই উপযুক্ত সময় হলো যৌবন। মহান আল্লাহ বলেন, 'আর মুসা যখন যৌবনে পদার্পণ করল এবং পরিণত বয়স্ক হলো, তখন আমি তাকে বিচারবুদ্ধি ও জ্ঞান দান করলাম। আর এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।