বই সম্পর্কে ইসলামপূর্ব পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি ধর্মে আধ্যাত্মিকতার চর্চা ছিল—যেহেতু এটি উপাসনার চূড়ান্ত পর্যায়কে আত্মস্থ করতে চায়। সে সব আধ্যাত্মিকতার সবগুলোই মানবের মানবিকতা ও জীবনের অনেক বৈধ চাহিদাকে প্রত্যাখ্যান করে আপন বৃত্ত নির্মাণ করেছিল। ধর্মে উপাসনা ও আধ্যাত্মিকতা থাকবেই। তবে সেটি যদি ঐশী হয়ে থাকে, তাহলে দৃষ্টিপাত করতে হয় এর বিশুদ্ধতার প্রতি—প্রতিটি কালের নির্ধারিত ধর্মের সুচারু মান্যতা নিরূপণ করার জন্যে। পূর্বেকার সে সব ধর্মের মতোই ইসলাম মাঝের বৃহৎ একটা সময় জুড়ে সুফি-সাধকদের বিচিত্র ভাবনা ও মতাদর্শের জালে আবদ্ধ হয়েছে। সে সব চিন্তাধারার দু প্রান্তে অসংখ্য মনীষী কথা বলেছেন। গড়ে উঠেছে এক বিস্তৃত চিন্তাঘরানা (স্কুল অফ থট)। এগার শতাব্দীরও অধিক সময়কাল ধরে এই আলোচনা ও মুজাকারা অব্যাহত আছে ইসলামি জ্ঞানের সিলসিলায়। সেই সিলসিলার সমগ্রটা না হোক, অন্তত সারাৎসারটুকু আমাদের জানা দরকার। যে কোনো মতাদর্শ বা দলের চিন্তাধারা ও বিবর্তনের শেকড় স্পর্শ করতে চাইলে অতীত মনীষীদের মূলানুগ পাঠের উত্তম বিকল্প নেই। ইসলামি সুফিবাদ (তাসাউফ) অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সেই পন্থাটিই অবলম্বন করা হয়েছে এই গ্রন্থে। বহুধাবিভক্ত বিচিত্র ঘরানার ইসলামি ব্যক্তিত্বগণ বিপুল সমারোহে কথা বলেছেন এখানে, একটি আলোকিত শামিয়ানায়।