দি এবিসি মার্ডার্স: পুলিসের নাকের ডগায় একের-পর-এক খুন করে চলেছে এক দুর্ধর্ষ খুনি! রহস্যময় এই ঘাতক, শিকার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে মেনে চলছে অদ্ভুত এক সিরিয়াল—ইংরেজি বর্ণমালা! খুনের স্থান-কাল অগ্রিম জানিয়ে চ্যালেঞ্জ জানানো হলো দুঁদে গোয়েন্দা এরকুল পোয়ারোকে: পারলে ঠেকাও...! স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে সাথে নিয়ে কোমর বেঁধে লড়াইয়ে নামল পোয়ারো; কিন্তু মহা-ধুরন্ধর আর বেপরোয়া খুনিটার সঙ্গে এঁটে ওঠা যে বড্ড কঠিন! ধীর লয়ে ‘এ’ থেকে ‘জেড’-এর দিকে এগিয়ে চলেছে লোকটা। কে সে? কী চায়? কিছুই জানা নেই! তবে এটা ঠিকই জানা আছে যে, খুব তাড়াতাড়ি লোকটাকে থামাতে না পারলে প্রলয় নেমে আসবে গোটা ইংল্যান্ডের ওপর! পার্টনার্স ইন ক্রাইম: অভিযানের আশায় মুখিয়ে থাকা টমি আর টাপেন্স বেরেসফোর্ড যখন প্রস্তাব পেল, ব্লান্ট’স ইন্টারন্যাশনাল ডিটেকটিভ এজেন্সির দায়িত্ব নিতে হবে, তখন লুফে নিলো যেন। গোলাপি মুক্তো উদ্ধার করার পর, একে-একে অনেকগুলো রহস্যের সমাধান করে ফেলল ওরা। কিন্তু একেকটা যে আরেকটার চাইতে বিপজ্জনক! ক্রমেই গভীর থেকে গভীরে অনুপ্রবেশ করতে লাগল ওরা। কিন্তু বের হবার আলো দেখতে পাবে তো? পোস্টার্ন অভ ফেইট: গ্রামের দিকের একটা বাড়ির মালিক-মালকিন বনে গেছে টমি আর টাপেন্স বেরেসফোর্ড। তবে দালানের সঙ্গে পেয়েছে আরও অনেক কিছু, যাদের মাঝে পুরাতন কিছু বই উল্লেখযোগ্য। এমনই একটা বই ওলটাতে গিয়ে রহস্যময় একটা ব্যাপার আবিষ্কার করল টাপেন্স: থেকে থেকে কিছু জায়গায় দাগ কেটেছে কেউ। সেগুলো নিয়ে আলাদা ভাবে বসে আবিষ্কার করল একটা বার্তা: মেরি জর্ডান স্বাভাবিকভাবে মারা যায়নি! সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপারটি হলো: সেই খুনের ষাট বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আজও শয়তানী চালিয়ে যাচ্ছে মেরি জর্ডানের শত্রুরা!
'দ্য কুইন অব ক্রাইম' ও 'দ্য কুইন অব মিস্ট্রি' নামে পরিচিত আগাথা ক্রিস্টি অপরাধ বিষয়ক বা রহস্য উপন্যাস রচনার ক্ষেত্রে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তাঁর পুরো নাম আগাথা মেরি ক্ল্যারিসা ক্রিস্টি৷ বিখ্যাত এই ইংরেজ লেখিকা সকল গোয়েন্দাগল্প ও রহস্যকাহিনী পাঠকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তাঁর অসাধারণ লেখনীর মাধ্যমে। তিনি বেশ বিখ্যাত কিছু চরিত্রের স্রষ্টা, যাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো গোয়েন্দা এরকুল পোয়ারো এবং মিস মার্পল, যাদের নাম শোনা যায় গোয়েন্দাকাহিনী পাঠকদের মুখে মুখে। 'ম্যারি ওয়েস্টমাকট' ছদ্মনাম ব্যবহারকারী এই প্রখ্যাত লেখিকা ১৮৯০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ডেভন এ জন্মগ্রহণ করেন। আগাথা ক্রিস্টি এর বই সমূহ মূলত রোমাঞ্চ, হত্যারহস্য, অপরাধ ও গোয়েন্দাকাহিনী এবং রোমান্টিক ঘরানার। 'গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী আগাথা ক্রিস্টির বই বিশ্বের ইতিহাসে সর্বাধিক বিক্রিত বই এবং এক্ষেত্রে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে শুধু আরেক কিংবদন্তী সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারকেই ধরা যায়। আগাথা ক্রিস্টি এর বই সমগ্র এর সংখ্যা প্রায় আশিটি। আগাথা ক্রিস্টি রচনাসমগ্র এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দ্য মিস্টিরিয়াস অ্যাফেয়ার এট স্টাইলস, দ্য মার্ডার অফ রজার অ্যাকর্ড, দ্য বিগ ফোর, দ্য মিস্ট্রি অফ দ্য ব্লু ট্রেন, পেরিল এট এন্ড হাউস, মার্ডার ইন মেসোপটেমিয়া, ডেথ অন দ্য নাইল, অ্যাপয়েন্টমেন্ট উইথ ডেথ, এরকুল পোয়ারোজ ক্রিসমাস, স্যাড সাইপ্রাস, দ্য মার্ডার অ্যাট দ্য ভিকারেজ, দ্য বডি ইন দ্য লাইব্রেরি, দ্য মুভিং ফিংগার, এ মার্ডার ইজ এনাউন্সড, দে ডু ইট উইথ মিররস, এ পকেট ফুল অফ রাই, ৪:৫০ ফ্রম প্যাডিংটন, নেমেসিস ইত্যাদি। আগাথা ক্রিস্টি সমগ্র এর মধ্যে আরো রয়েছে বিখ্যাত সব নাটক, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা দৈর্ঘ্যের নাটক 'দ্য মাউজট্র্যাপ'। আগাথা ক্রিস্টি অনুবাদ বই এর সংখ্যাও অনেক, এমনকি ইউনেস্কোর বিবৃতি অনুযায়ী তাঁর বইগুলো সবচেয়ে বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর বাংলা ভাষায় অনূদিত বইয়ের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। অনূদিত আগাথা ক্রিস্টি বাংলা বই এর মধ্যে 'সিরিয়াল কিলার', 'গেম ওভার', 'পোয়েটিক জাস্টিস', 'খুনের তদন্ত', 'মার্ডার ইন মেসোপোটেমিয়া', 'থ্রি ব্লাইন্ড মাইস', 'এ বি সি মার্ডার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য৷ সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭১ সালে তিনি 'ডেম' উপস্থিতিতে ভূষিত হন। ১৯৭৬ সালের ১২ জানুয়ারি আগাথা ক্রিস্টি ৮৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারে মৃত্যুবরণ করেন।