পাবলিশার’স নোট বাংলাদেশের গ্রেট সিঙ্গার আজম খান (১৯৫০ - ২০১১) নিজের বেশিরভাগ গান নিজেই লেখছেন। একটা ইন্টারভিউ’তে উনি বলতেছিলেন, শ’খানেক গান উনি লেখছেন। গান লেখার প্রসেস নিয়াও বলছেন যে, কথা আর সুর একইসাথে কাজ করছে উনার গান-মেকিংয়ের জায়গাটাতে: “আমি কিন্তু কাগজে কলমে লিখি না। স্লিপ অফ টাং বাইর হয়া যায়, ওইটাই পরে টাইনা গান বানায়া ফেলি, সুর-টুর লাগায়।… এই যে আজকে গান লিখতে হবে চেয়ার টেবিল নিয়া বসলাম এইটা না। জার্নিতে থাকতে, রিকশায় একটা গান বের হয়া গেল। এইভাবে হইছে আর কি। (সুর আর কথা) একই সাথে, স্লিপ অফ টাং আর কি। তারপর উইঠা গিয়া ধরেন সম্পূর্ণ গান তৈরি করতাম।… রাত্রে ঘুমের ঘোরে হয়তো রাত্রে শুয়া রইছি, দুইটা তিনটার সময় ঘুম ভাঙল, হয়তো একটা কিছু মনে পড়ল, ফট কইরা টুকে রাইখা দিলাম। পরে ওইটা কাজে লাগাইলাম।” আজম খান হইতেছেন বাংলাদেশের জাত-শিল্পী। বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস, খাল-বিলের কথা উনি বলছেন, বাংলাদেশের মানুশের সুখ-দুক্খের জায়গাগুলারে টাচ করতে চাইছেন: “এই ব্যাপারটা হইতাছে, আমি যে গান গাবো, আপনি যে শুনলেন, আপনার ভালো না লাগলে আমি গাইবো কেন? সেই চিন্তাটা আগে থাকতে হবে। কিন্তু এরা সেই জিনিসটা করতাছে না। অনেকটা ফ্যাশান হিসাবে নিতাছে। মানে একটা শিল্পীর, কিছু চুল রাখলো, কিছু বালা টালা পড়লো, কানের দুল পড়লো, রঙচঙ শার্ট পড়লো, এই একটা গিটার নিয়া ঘুরতাছে—শো-শা আর কি। ওই যে আমি বললাম না আমরা সিঁড়ি বায়া বায়া উঠছি, কিন্তু এরা লিফটে উঠতে চায়। রাতারাতি স্টার হইতে চায়। কোথায় কীভাবে টেলিভিশনে প্রোগ্রাম করবে, কীভাবে ক্যাসেট বাইর করবে, এইসব ধান্দা ফিকির নিয়াই ব্যস্ত। কিন্তু মূল যে মানুষকে কিছু দিতে হবে, ভালো জিনিস উপহার, ওই টেনডেন্সিই নাই। ওই মানসিকতা নাই। একটা কিছু সৃষ্টি করতে হবে আমাদের আকাশ বাতাসের কথা বলতে হবে, আমাদের খালবিলের কথা বলতে হবে, আমাদের দেশের সুখ দুঃখের কথা বলতে হবে।” তো, আজম খানের গান তো শুনবেনই, উনার গানের কথাগুলাও পড়েন! হ্যাপি রিডিং!