ফ্ল্যাপ থেকেঃ সাজিদের কথা মনে পড়তেই বুকের ভেতরটা কেমন করে উঠে নিতুর। এইযে এত এত দিন গত হচ্ছে সাজিদের কি একটা মুহূর্তও তার কথা মনে পড়ে না! এক মুহুর্তও না? এইযে নিতু এভাবে ওর কথা ভাবছে, বুকের ভেতর আষ্টেপৃষ্টে থাকা ওর স্মৃতি উঁকি দিচ্ছে, সাজিদ কি এসব টের পায়?
বুঝতে পারে? এমন কেন হয়? জগতে অজস্র মানুষ থাকতে ঐ একটা মানুষ কেন জীবন জুড়ে থাকে। নিতুর জীবনে তো আরেকটা মানুষ এসেছিল! কই তার কথা তো বুকের ভেতর উঁকি দেয় না। তাকে তো মন বেঁধে রাখেনি। কেবল একটা মানুষকেই কেন মন বেঁধে রাখে। এইযে নিতুর ভেতরে একটা মানুষের অস্তিত্ব তৈরি হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে আরেকটা মানবজনম! তার কি হবে? সে কি পৃথিবীর আলো দেখবে! নাকি নিতুর বুকের ভেতর থাকা অজস্র প্রশ্নবোধক জিজ্ঞাসার দংশনে নতুন আগত মানবজনমও দংশিত হবে?
এই শহর মধ্যরাতে লাশের শহরে পরিণত হয়। সেই অন্ধকারে সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে মানুষজন যখন গভীর ঘুমে আছন্ন ঠিক সেই মুহূর্তে হিংস্র শ্বাপদের মতো জলপাই রঙের ট্যাংকগুলো প্রবেশ করল শহরের বুকে। আকাশ- পাতাল কাঁপিয়ে গর্জে উঠলো রাইফেল, মেশিনগান আর মর্টারের শব্দ। মনে হচ্ছে আস্ত আকাশ একে একে মাথার উপর ভেঙে পড়ছে। ঘুমে আছন্ন মানুষ কিছু বুঝে উঠার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।