কিছু মানুষের দাবী ইমাম বুখারী (رحمه الله) তৎকালীন রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশের বশবর্তী হয়ে আহলে বাইতের থেকে হাদীস বর্ণনা করেননি। কিন্তু দাবিটি মোটেও ঠিক নয়। আমরা দেখতে পাই, জাহমিয়্যা, মু'তাযিলা, শিয়া, আশ'আরিয়্যাহ, মাতুরিদিয়্যাহ, মুরজিয়া, খারিজী, কাদারী, জাবারী ইত্যাদি যাবতীয় পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় সর্বদা হাদীসের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং করে চলেছে। এসব ফিরকার মধ্যে বিখ্যাত যেসব দল ও উপদল সরাসরি ইসলামের গভীরে আঘাত হানার জন্য তাদের সব রকমের প্রচেষ্ট অব্যাহত রেখেছে তাদের মধ্যে শিয়াবাদ সর্বাগ্রে। তারা হাদীসের ধারক সাহাবায়ে কেরামকে তাকফীর করে, হাদীসের বাহক তাবে'ঈনে ইযামকে অগ্রহণযোগ্য মনে করে, হাদীসের গ্রন্থকার জগতের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ইমামদেরকে খারাপ বিশেষণে বিশেষিত করে তাদেরকে বিতর্কিত করে ইসলামের মূলে কোঠারাঘাত করার হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তাদের এই হীন প্রচেষ্টা সফল করার লক্ষ্যে হাদীসের ইমামগণের বিরুদ্ধে আহলে বাইত তথা নবী-পরিবার বিদ্বেষী, যাকে তারা নাসেবিয়াত বলে থাকে, সে তকমা লাগানোর প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মুহাদ্দিসগণের দারা জমা করা হাদীস ও হাদীসের গ্রন্থে সন্দেহ প্রবেশ করাতে সক্ষম হওয়ার জন্য তারা এ ধরনের মিথ্যা অপবাদ রচনা করে থাকে। এ সর্বনাশা চিন্তা থেকে তারা ইমাম বুখারী (رحمه الله)-এর মত সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে আহলে বাইতে বিদ্বেষী সাব্যস্ত করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বর্তমানে মিডিয়ার যুগে সর্বত্র প্রচার করে বেড়াচ্ছে। বস্তুত এদের কথা হলো, আকিদার ক্ষেত্রে এদের বিরোধী সবাই নাসিবী। তাই বিষয়টি ইমাম বুখারীতে সীমিত না। কিন্তু তারা ইমাম বুখারীর উপর আক্রমণ চালিয়েছে কারণ তার মর্যাদা অনেক উঁচু। তার বই মানুষের কাছে অনেক গুরুত্ব পায়। তারা যদি এর মর্যাদা কমিয়ে দিতে পারে কিংবা এর স্বচ্ছতার ব্যাপারে মানুষের মনে সংশয় সৃষ্টি করতে পারে তাহলে মানুষের মাঝে তাদের বিদ'আত ছড়ানোর সব বাধা দূর হয়ে যাবে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে কুরআনকে প্রবৃত্তির চাহিদা মোতাবেক ব্যাখ্যা করবে। দীনকে হাসি তামসার পাত্র বানাবে। এর মাধ্যমে শত্রুরা তাদের উদ্দেশ্য সাধন করবে। এসব দুরাশা নিয়ে তারা বিশেষ করে ইমাম বুখারী বিরুদ্ধে নেমেছে। আল্লাহ তার দ্বীনকে পূর্ণ করেছেন। এ দীনের পক্ষ থেকে অসত্য ও মিথ্যার বেড়াজাল ছিন্ন করার জন্য কিছু ব্যক্তিকেও যুগে যুগে প্রেরণ করেছেন, যারা এসব অসত্যকে সত্যের আলোতে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছেন। অনেকে এ ব্যাপারে কলম ধরেছেন, গ্রন্থ লিখেছেন। সেসব গ্রন্থের মধ্যে বর্তমান গ্রন্থটি অন্যতম।