যা কিছু প্রেমের তার, আদ্য মধ্য সমাপ্তি জুড়ে শুধুই সৌন্দর্য। যেভাবে মাতৃ-পিতৃপ্রেম, যেভাবে সন্তান-যেভাবে ফুল পাখি পতঙ্গ প্রকৃতি কিংবা মানুষ এসে দাঁড়ায়, সমস্ত প্রেমই একই উৎস হতে নিঃসৃত। প্রকৃত প্রেমি তাই স্পর্ধার সাথে ভেঙে ফেলতে চায় সীমানাপ্রাচীর, গারদের শিক আর শেকলের কথকতা।
প্রেম তার নারীতে পুরুষে, পুরুষে নারীতে-এই যে সরল সমীকরন, তার বাইরে যাকে ভাললাগে-তাকে তুমি কোন নামে পরিচয় করাবে! পুরুষ ও পুরুষ কিংবা নারী ও নারী-তা যদি যৌন বা অযৌন যে কোন উপায়ে সংগঠিত হয়, যদি ভালোলাগা যদিবা ভালবাসা, মানুষ ও মানুষের এমন সংযোগ, এমন প্রেমকে তুমি মহিমান্বিত করবে না কেন? এমন একটি বোধ ও বোধের আলোড়ন থেকেই কবি সাফিনা আক্তার একগুচ্ছ সমপ্রেমের কবিতাকে পরিচয় করাতে চাইলেন তার “ভুলে থাকা পাপ” কাব্যগ্রন্থে।
নারী গোলাপ! কন্যা, জায়া, জননী গোলাপের মোট তিনটি রূপ! না বলা কথা-কুঁড়ির সুখ। প্রথমা, টগবগ, আর বৃদ্ধের ধূপ। ভুলে থাকা পাপ, পৃষ্ঠাঃ০৯
কবি সাফিনা আক্তার এভাবেই নারীর কীর্তণ দিয়ে শুরু করেন ভুলে থাকা পাপের যাত্রা। তার নারীরা আবহমান ও আটপৌড়ে নারীর মতোই গোলাপের অবয়বে ভূমিষ্ঠ হয়, তারপর “হঠাৎ একদিন দুই পাতার ফাঁকে মূল কাণ্ড ভেদ করে বিন্দু কুঁড়ির মুখ ভেসে উঠে মালিনীর বাগান জুড়ে রিনিঝিনি শিহরণ” আনে। যুবতীর টগবগ আন্দোলন আর বৃদ্ধা ধূপদানীর অলস ধোঁয়ার মধ্যবর্তী আস্ত একটা জীবন, সেখানে তার প্রেম কাম স্বপ্ন ও সাধনার বিস্তৃত বিস্ময়ের খোঁজ কেউ পায়, কেউ কেউ কোনদিনই পায় না।