থিয়েটারের কথা, চতুর্থ খণ্ডের কালসীমা ধরা হয়েছে ১৮৫০-১৯৩৯। বছর হিসেবে এক শতাব্দীর কম কিন্তু বিশ্বনাটকের ক্ষেত্রে অসাধারণ সব পরিবর্তনের কাল। এ-পরিবর্তন সর্বতোমুখী। জিয়া হায়দার তার সবই ধরে রাখতে চেয়েছেন দুই মলাটের মধ্যে। তিনি আরম্ভ করেছেন থিয়েটারের স্থাপত্য-সম্পর্কিত কথা দিয়ে : চুন-সুরকির প্রেক্ষাপট থেকে কংক্রিট-স্টিলের থিয়েটারে উত্তরণ, বক্স ও চারপাশের গ্যালারির বিলুপ্তি, নতুন প্রযুক্তি, অভিনব কারিগরি কৌশল, বিস্ময়কর সব পদ্ধতি। শিল্প সম্পর্কিত যেসব মতবাদ প্রত্যক্ষভাবে থিয়েটারকে প্রভাবান্বিত করেছে, তারও কথা বলতে হয়েছে লেখককে; বাস্তববাদ-প্রকৃতিবাদ থেকে ফর্মালিজম-স্ট্রাকচারালিজ্ম, এমন কি স্বল্পায়ু কনস্ট্রাকটিভিজমও বাদ যায়নি। বিংশ শতাব্দীতে তো তত্ত্বের কিছু অভাব নেই; প্রতি বিশ বছরে দুটো করে নতুন তত্ত্বের উদ্ভব হয়েছে বোধহয়। তারপর নানা নামের থিয়েটার প্রচলিত হয়েছে। টোটাল থিয়েটার, খেতর লিবের, এপিক থিয়েটার, থিয়েটার অব ক্রয়েলিটি, ডকুমেন্টারি থিয়েটার, আরো কত কি। এসব বিষয় বাদ দেওয়ার নয়। নতুন নাট্যকারদের কথা বললেই দায়িত্ব শেষ হয় না, বলতে নয় নতুন নির্দেশকদের কথা। সেই সঙ্গে এসে পড়ে জটিল সব নাট্যতত্ত্ব, কঠিন সব অভিনয়চিন্তা। জিয়া হায়দার সবই বলতে চেয়েছেন স্বল্পপরিসরে, মাপা কথায়। এত জিনিস একসঙ্গে নেওয়া কঠিন পাঠকের পক্ষে। রয়েসয়ে একটু একটু করে নিতে হবে। তখন পাঠক বুঝবেন। জীবন হেলাফেলার হতে পারে, কিন্তু থিয়েটার খেলার নয়।