মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়ানো ট্রেজারি অফিসার তরফের জীবন নিয়ে কেন এ খেলা? অসৎ পথে উপার্জিত লক্ষ লক্ষ টাকা তারই স্ত্রী সোনাভান কুক্ষিগত করে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় তরফকে, এ কেমন নিষ্ঠুর খেলা? একদিকে সোনাভানের মেয়ে পরীবানু জোর করে সুদর্শন যুবক ডাক্তার আসিফের ভালোবাসা পেতে চায়।... অন্যদিকে খালাতো বোন নুসরাতের সাথে আসিফের দীর্ঘ দিনের প্রেম।... পরীবানুর মা সোনাভান অর্থ আর ক্ষমতার দাপটে আসিফ ও নুসরাতের প্রেমের মৃত্যু ঘটিয়ে আসিফের সাথে মেয়ে পরীবানু ওরফে ঘসেটি বেগমের বিয়ে দেয়।... আসিফের বাবা জাফর আলী নিষ্ঠুর প্রকৃতির লোক। তাছাড়া প্রচণ্ড লোভী! অর্থের লোভে সোনাভানের দেয়া ‘মীর জাফর' উপাধি সে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে।... সুযোগ সন্ধানী জাফর আলী সুযোগ বুঝে সোনাভানের একমাত্র ছেলে মোহাম্মদী বেগকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে। একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে উদ্ভ্রান্ত সোনাভান জাফরকে উদ্দেশ্য করে বলে, 'ওকে আমি একটা উপাধি দিয়েছিলাম যা কিনা সে আমার উপরই প্রয়োগ করলো?"
জীবন কি শুধু এই পৃথিবীর সুখ-দুঃখকে নিয়ে গড়া? না কি তা শুধুই মরীচিকা? সহৃদয় পাঠক আশা করি এ বইটি পড়ে উত্তরটা খুঁজে পেতে চেষ্টা করবেন।
আপনজন সবাইকে হারিয়ে পরীবানু জীবনের অর্থ যেন খুঁজে পেয়েছে! আজ সে উপলব্ধি করতে পেরেছে জীবন কোনো ঘাটে বাঁধা তরী নয় যাতে যাত্রীরা পারাপার করবে! এটা কোনো আকাশের তারা নয় যে, তা দূর আকাশে শুধুই মিটমিট করে জ্বলবে! জীবন কোনো কাব্য নয় যে, অব্যক্ত সৌরভ ছড়াবে। আজ পরীবানু উপলব্ধি করতে পারছে এই পৃথিবীর ধুলোমাটিতে লুটোপুটি খাওয়া এবং ধুলোমাটির সুখ-দুঃখকে আপন করে নিয়ে তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। পরীবানু ভাবছে, 'আমি আজ এই জীবনটাকেই ভালোবাসতে চাই, একেই আপন করে নিতে চাই, হোক তা স্বল্প সময়ের জন্য। তবুও তো শেষ পর্যন্ত সত্যিকারের একটা জীবনের খোঁজ আমি পেলাম, যার ছোঁয়ায় আমার এ অভিশপ্ত জীবনটার সমাপ্তি ঘটবে! আমার এই বিশ্বাস ও সান্ত্বনা নিয়ে পরম সুখে আমি মরতে চাই।' আমাদের বিশ্বাস 'এ যুগের সোনাভান' বইটি পাঠ করে পাঠক নিজের বোধ ও বিশ্বাসকে শাণিত করতে পারবেন।