নারী যখন সফল হয় তখন তার শুভাকাঙ্ক্ষি কিংবা গুণগ্রাহীর অভাব হয় না। কিন্তু সফল হওয়ার জন্য যে পথ পাড়ি দিতে হয় সে পথে কাউকে সাথে পাওয়া যায় না। কয়েকজন ব্যতিক্রম বাদে বেশিরভাগ নারীরা সমাজ, পরিবার ও চারপাশের বাধা ডিঙিয়ে তবে পথে চলেন। হ্যাঁ, নারীদের পথ চলার নানা চড়াই উৎরাই আর তা পেরিয়ে উঠার পথ দেখাতে, ভরসা জানাতে “ওমেন এন্ড ই-কমার্স”-এর প্রতিষ্ঠাতা নাসিমা আক্তার নিশা লিখেছেন একটি পথরেখা। যার নাম নারী উদ্যোক্তার পথ চলা।
সমাজ সংসারের নানা ঘাত-প্রতিঘাত আর কন্টক বিছানো পথ পাড়ি দিতে আমরা যদি নারীদের পথ দেখাতে পারতাম, সাহস দিতে পারতাম, ভরসা যোগাতে পারতাম, হয়তো দেশ সমাজের জন্য মমতা ঢেলে কাজ করতে আরো বেশি নারীকে পেতাম। যেমন করে আমাদের প্রতিটি পরিবারের সুখ শান্তি একজন নারীর হাতে নিশ্চিত হয়। নিশ্চিত হয় পরিবারের প্রতিটি প্রজন্মের নবীনদের গড়ে ওঠা। কিছু গল্পে, কিছু দৃষ্টান্তে, কিছু বৈশ্বিক আঙিনায়, কিছু দেশীয় প্রেক্ষাপটে কতিপয় নারী উদ্যোক্তাদের সংগ্রামী জীবনের গল্প আপনার চোখের কোণে এক বিন্দু জল এনে দিবে। কিন্তু তাদের প্রত্যয় আর দৃঢ়তার শক্তি আপনাকে নতুন করে বাঁচতে, ভাবতে, চলতে সাহায্য করবে।
বিশ্লেষণী পরামর্শের সাথে নারী উদ্যোক্তাদের সংগ্রামী গল্প নিয়েই নাসিমা আক্তার নিশার বই ‘‘নারী উদ্যোক্তার পথচলা’’’।
যে নারী খাঁটি সন্তান তৈরি করে সে নারীর হাতে এখন বাংলাদেশের লাখো উদ্যোগ। নানা উত্থান-পতন পেরিয়ে একেকটি উদ্যোগ পরছে জয়ের মালা।
নাসিমা আক্তার নিশা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর পরিচালক ও স্টার্ট-আপ রেভেরি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি প্রায় ১৫ লাখ নারী উদ্যোক্তাদের প্লাটফর্ম উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের (উই) প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৫ সালের ১৮ নভেম্বর বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘বনরূপা’তে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১০ সালে ‘রেভেরি কর্পোরেশন’ নামে গেমিং সফটওয়্যারের প্রতিষ্ঠান দাঁড় করান। পাশাপাশি ‘এক্সপোটেক্স ফ্যাশন’ নামে একটা গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেন। জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮২ সালের ৮ আগস্ট ঢাকার বনানীতে। বাবা মরহুম হাজী মো. সাহাব উদ্দীন এবং মা সাজেদা বেগম। বনানী মডেল স্কুল থেকে এসএসসি করেছেন। এরপর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ও সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন ২০১২ সালে। ২০০৬ সাল থেকেই বাবার নামে একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন। এই ফাউন্ডেশন থেকে প্রতি বছর তৃতীয় শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষার্থীদের 'হাজী সাহাব উদ্দীন স্মৃতি বৃত্তি' নামে বৃত্তি দিয়ে থাকেন তিনি। শজুড়ে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ডব্লিউআইসিসিআই অ্যাওয়ার্ড-২০২১ লাভ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং এক সন্তানের জননী।